ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রোজাতেও আরামের শপিং বসুন্ধরা সিটিতে!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
রোজাতেও আরামের শপিং বসুন্ধরা সিটিতে! ছবি: কাশেম হারুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দিনভর রোজা রেখে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কেনাকাটার সাহস অনেকেই পান না। রোজা ভাঙার ঝুঁকি নিতে চান না এমন মানুষদের জন্য উপযুক্ত স্থান রাজধানীর অভিজাত বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স।


 
প্রতিদিন এখানে ভিড়, লোকে-লোকারণ্য পরিবেশ। কিন্তু স্বস্তিতে ভাটা পড়বে না এতটুকুও। একবার এসে পৌঁছালে খালি হাতে ফিরবেন না ক্রেতারা। আপাদমস্তক যা যা কিছু প্রয়োজন হতে পারে, তার সবটুকুর যোগান রাখার চেষ্টা করা হয়েছে এ শপিংমলে।  
 
অনেকেই সকালে এসে সারাদিন ধরে কেনাকাটা করছেন। এখানে নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি লেভেলে রয়েছে, অনেকগুলো করে ওয়াশরুম, লেভেল-৮ জুড়ে খাবারের আয়োজন। যার যার পছন্দ অনুসারে বেছে নিচ্ছেন ইফতার সামগ্রী। ঈদের আনন্দকে যেন অগ্রিম উপলব্ধি করাচ্ছে এ উৎসবমুখর পরিবেশ।
 
শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে নিশ্চিন্তে এখানে চলে এসেছে অনেক পরিবার। সামাজিক নিরাপত্তাই যার সবচেয়ে বড় কারণ।
 
যার যা পছন্দের, তাকে নিয়ে কেনাকাটা করলে মনোমালিন্যের আর কোনো কারণ থাকে না- বাংলানিউজকে এ কথা বলেন মিরপুর থেকে আসা রওশন আরা।

তিনি শাশুড়ি, ননদ ও ভাইয়ের স্ত্রীকে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। ভাইয়ের স্ত্রীর কোলে মাত্র ২ বছরের শিশুসন্তান।
 
তারা জানালেন, প্রতি ঈদেই এখানে একবার হলেও আসেন তারা। অনেক বেশি আইটেম অনেক কম সময়ে কিনতে চাইলে এ শপিংমলের কোনো জুড়ি নেই।
 
আবুধাবি থেকে দেশের বাড়ি কুমিল্লায় এসেছেন আরাফাত হোসেন। ঈদের কেনাকাটা করতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে চলে এসেছেন বসুন্ধরায়।
 
একটু হেসে বাংলানিউজকে আরাফাত বলেন, বাইরে রোদে ঘুরে ঘর্মাক্ত হয়ে শপিং করার ধৈর্য্য হয় না এখন। এক বছর পর পর দেশে আসি ঈদ করতে। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে এখানেই কেনাকাটা করতে চলে আসি। সকালে ঢাকা আসি। রাত ৯টার দিকে আবার কুমিল্লার দিকে রওয়ানা হই। সারাদিনের কেনাকাটায় আরাম পাই এখানে। সেন্ট্রাল এসি ও একই সঙ্গে সব কিছু থাকায় বাইরের রোদ-বৃষ্টি গায়ে লাগে না। ইফতারের আইটেম পাওয়া যায় ভালো। বাচ্চারা বেছে নিয়ে খায়। বউ-বাচ্চা খুশি। কোনো চিন্তা নেই!
 
সত্তরোর্ধ্ব আম্বিয়া আফরোজ এসেছেন আজিমপুর থেকে। বাংলানিউজকে তিনি জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পর ঈদের কেনাকাটায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বিগত কয়েক বছর ঈদের কেনাকাটা করতে এ মলে নিয়ে আসে ছোট ছেলের বউ। সারাদিন এখানে থেকে কেনাকাটা, নামাজ, ইফতার সেরে এক ধরনের বেড়ানো শেষে বাড়ি ফিরে যান।
 
রোববার (১২ জুলাই) ছুটির দিন নয়। তারপরও শপিংমলের চিত্র দেখে মনে হবে, ছুটির সুযোগেই এত ভিড়। ঢুকতেই চোখে পড়বে চকচকে লাল টয়োটা গাড়ি। পাশেই সাজানো রয়েছে মনোমুগ্ধকর একটি হীরার গয়নাসেট। এসব বিক্রির জন্য নয়। ক্রেতারা যেসব পণ্য কিনছেন, সঙ্গে পাচ্ছেন কুপন। তারই র‌্যাফেল ড্র-তে মিলবে এ আকর্ষণীয় গাড়ি ও গয়না। এ শপিংমলে প্রতিবারই এমন আকর্ষণ রাখা হয়।
 
বেজমেন্টে মস্তফা মার্ট, লেবেল-১ এ পোশাক, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, কসমেটিকসের রকমারি আয়োজনে ভিড় অবশ্য সবসময়ই থাকে।
 
লেবেল ২, ৩, ৪, ৫, ৬,৭-এ পোশাক, গয়না, জুতার সম্ভার মুগ্ধ করবে সবাইকে।
 
লেবেল-৭ এ দেশি কাপড়ের জনপ্রিয় শোরুম ‘দেশি দশ’। বিদেশি কাপড়ের আগ্রাসন যারা একদমই পছন্দ করেন না, তারা নিশ্চিন্তে এখানে আসেন। পছন্দের কাপড় পেয়ে যাচ্ছেন এখান থেকেই।
 
বাংলার মেলার বিপণন কর্মকর্তা মো. শহীদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশের আবহাওয়া ও ঐতিহ্যের প্রতি লক্ষ রেখে দেশি পোশাক রাখি আমরা। অনেক ক্রেতাই দেশি কাপড় পছন্দ করেন। তবে বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের পোশাক ব্যবসায় যেভাবে লেগে যাচ্ছে, সেটি থেকে সচেতনতাই পারে মুক্ত করতে। সবাইকে বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
 
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছেলেদের এবারও প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি, সঙ্গে পাজামা, চুড়িদার। এবার কটির দিকে ঝোঁক দেখা যাচ্ছে অনেকেরই।  
 
মেয়েদের সালোয়ার কামিজ, কোর্তা বেশি বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির ক্রেতাও রয়েছে বরাবরের মতোই। এবার অনেক টিনএজার পছন্দ করছেন গাউন। মেয়েদের কটিও রয়েছে রঙ-বেরঙের।
 
শিশুদের পোশাকের সঙ্গে কটি ও মূল জামাতেও কটির ডিজাইন আনা হয়েছে।
 
পোশাকের সঙ্গে ব্যাগ, জুতা, কসমেটিকস ও জুয়েলারির সম্ভার থেকে বেছে নিচ্ছেন কেউ একই রঙের বা বিপরীত রঙের সামগ্রী।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৫
এসকেএস/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।