বাগেরহাট: বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংক থেকে রুপালী ব্যাংকে দেওয়া এক হাজার টাকার ১০টি বান্ডিলে (এক প্যাকেট) ১০০ টাকার নোট পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি ক্ষতিয়ে দেখতে সোমবার (১৩ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল (খুলনা) বাগেরহাটে এসেছে।
এদিকে, এ ঘটনায় তদন্তে সোনালী বাংকের বাগেরহাট (প্রধান) শাখা ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার পর ব্যাংকপাড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যাংকের সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে আতংক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
সোনালী ব্যাংকের বাগেরহাট জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশুতোষ মণ্ডল বাংলানিউজকে জানান, ঘটনাটি তদন্তে ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার খান বাবুল রহমানকে প্রধান করে ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবে।
তদন্ত কমিটির প্রধানের নেতৃত্বে সোমবারের মধ্যে ভল্টে রাখা সব টাকা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তদন্তে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের খুলনা অফিসের যুগ্ম ব্যবস্থাপক (ক্যাশ) তুলসী দাস রায় ও উপ-ব্যবস্থাপক শাহরিয়ার সরেজমিনে উভয় ব্যাংকে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা ওই বান্ডিলগুলো বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
অন্যদিকে, রুপালী ব্যাংকের (খুলনা) ডেপুটি ম্যানেজার মৃর্ধা ইউসুব আলী বাগেরহাট শাখায় এসে তাদের ভল্টে থাকা সব টাকার বান্ডিল পরীক্ষা করেছেন।
তিনি জানান, এই বিষয়ে রুপালী ব্যাংকের কোনো দায় নেই। সোনালী ব্যাংক থেকেই কারসাজির ঘটনা ঘটতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে এর কিছু প্রমাণও পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক (খুলনা) যুগ্ম ব্যবস্থাপক (ক্যাশ) তুলসী দাস রায় বাংলানিউজকে জানান, প্রাথমিকভাবে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সোনালী ব্যাংকে পাঠানো বান্ডিলগুলো সঠিক ছিল। ২৭ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আসা ২৫ কোটি টাকা বুঝে পেয়ে সোনালী ব্যাংকের বাগেরহাট (প্রধান) শাখার কর্মকর্তারা লিখিত দিয়েছেন। |
তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০০৫ সালের একটি ঘোষণা অনুযায়ীই কোনো তফসিলি ব্যাংক অন্যকোনো ব্যাংক বা গ্রাহককে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্যাগ ও লেভেল লাগানো টাকা দিতে পারবে না। কিন্তু সোনালী ব্যাংক তা মানে নি। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, টাকায় গড়মিল থাকা বান্ডিলগুলোয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পিন খুলে তা আবার পুনরায় লাগানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বেরনোর আগে টাকার বান্ডিলের ওপর লাগানো কাগজ এবং বান্ডিলের প্রথম এবং শেষ টাকার গায়ে স্বাক্ষর থাকে। কিন্তু কয়েকটি বান্ডিলে তা নেই। এতে মনে হচ্ছে, গড়মিলের কারসাজি সোনালী বাংকের ভল্ট থেকে করা হতে পারে। আমরা বিষয়টির জন্য দায়ি ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৫
পিসি/
** বাগেরহাটে সোনালী ব্যাংকের সরবরাহ করা নোটে গরমিল, অভিযোগ রূপালীর