ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জমজমাট নতুন টাকার বিকিকিনি

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
জমজমাট নতুন টাকার বিকিকিনি ছবি:দেলায়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নতুন টাকার ঘ্রাণ, সৌন্দর্যই আলাদা। হাতে নিলেও যেন হয় এক ধরনের সুখানুভূতি! ঈদে নতুন পোশাকের মতো নতুন টাকাও হয়ে উঠেছে অনিবার্য প্রাপ্তির বস্তু।

সবার চাই নতুন টাকা। তাই ঈদ সামনে রেখে সবাই এখন ব্যস্ত নতুন টাকা সংগ্রহে।

সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর গুলিস্তান হকার্স মার্কেটের সামনে ফুটপাতের দোকানগুলো সাজিয়ে বসেছে নতুন টাকার পসরা। আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগ্রহীরা ছুটছেন সেই নতুন টাকা সংগ্রহে। বিকিকিনিও উঠেছে জমে। সারাবছরই এখানে পুরনো-ছেঁড়া টাকা পাল্টানো, ব্রিটিশ আমলের মুদ্রা বা অনেক আগের মুদ্রা বেচাকেনা বা নতুন টাকার বেচাকেনা হয়। তবে ঈদের সময় পাল্টে যায় রূপ।
 
বিশজনের মতো বিক্রেতা চকচকে নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন গুলিস্তানের ওই ফুটপাতে। প্রতিটি দোকানীর কথা বলারও ফুসরত নেই। এতই ব্যস্ত যে অনেক ক্রেতা দু’তিনবার দরদাম জিজ্ঞেস করে উত্তর না পাওয়ায় চলে যাচ্ছেন পাশের দোকানে।
এসব দোকানে তারা দুই টাকা থেকে এক হাজার টাকা বিকিকিনি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে চাহিদা দুই, পাঁচ, দশ আর বিশ টাকার নোটের। এর মধ্যে বেশি দাম দশ টাকার। বিক্রিও বেশি দুই আর দশ টাকার নোটের।
 
তবে নতুন নোটের দাম এবার একটু বেশি। সাপ্লাই কম হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। ১২ বছর ধরে এ ব্যবসায় জড়িত মোহাম্মদ মোবারক বাংলানিউজকে জানান, দুই টাকার নত‍ুন নোটে দামের কোনো পরিবর্তন নেই। এটা হাজারে ১শ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। একশ টাকার নতুন নোট বিক্রি হচ্ছে হাজারে ৩০ টাকায়।
 
কিন্তু ৫ টাকার নোট প্রতি হাজারে আগে ছিলো ৫০ টাকা, দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার ১৬০ টাকা। ১০ টাকার নতুন নোট প্রতি হাজারে আগে দাম ছিলো ৩৫ টাকা এবার ১২০ টাকা। বিশ ও পঞ্চাশ টাকার নোট আগে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা থাকলেও এবার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর পঞ্চাশ টাকার নোট পাঁচ হাজার টাকার কিনলে পাওয়া যাচ্ছে দুইশ টাকায়। তবে গতবারের তুলনায় দাম বাড়লেও নতুন নোট বিক্রিতে কোনো ভাটা নেই।
 
পাঁচ বছর ধরে একই ফুটপাতে নতুন নোট বিক্রেতা আমির হোসেন জানান, নতুন টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে দাম বেশি হলেও চাহিদা আগের মতোই আছে।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে জাকাতের টাকা দেওয়ার জন্য বা সেলামীর জন্য নতুন টাকা সংগ্রহ করছেন সবাই। কেননা, নতুন টাকা মানুষকে বেশি আনন্দ দেয়। দেখতেও সুন্দর।
 
একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন মাইদুল হাসান। তিনি জানান, দশ ও বিশ টাকার নোট কিনতে এসেছেন। ঈদে ছোটদের সেলামী দেওয়ার জন্যই নতুন টাকা সংগ্রহ করছেন তিনি।
 
বিক্রমপুরের অবসরপ্রাপ্ত এক স্কুল শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন জানান, ছেলে-মেয়ে, ভাতিজা-ভাতিজির ঘরে প্রায় ২০ জন ছোট ছোট নাতি-নাতনি রয়েছে তার। নতুন টাকা পেলে সবাই খুব খুশি হয়। তাদেরই জন্যই পাঁচ ও দশ টাকার দুইশ নোট কিনতে এসেছেন।
 
ব্যবসায়ী আসাদুর রহমান জানান, জাকাত দেওয়ার জন্য বিশ হাজার টাকার পাঁচ, দশ ও বিশ টাকার নতুন নোট কিনছেন। কেননা, জাকাতের টাকা কম হলেও নতুন নোট হাতে পেয়ে গরিব দুঃখীরা বেশি খুশি হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।