ঝিনাইদহ: বনবিভাগের পরামর্শে সৌদি আরবের ‘খির’ খেজুর গাছ লাগিয়ে বিপাকে পড়েছে ঝিনাইদহের কৃষকরা। পাঁচ বছরে ফলন আসার কথা থাকলেও ১৩ বছরেও খেজুরের মুখ দেখেনি তারা।
২০০২ সালে শুরুতে জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় লাগানো হয় ৪৫ হাজার খেজুর গাছ। এর মধ্যে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার নারানকান্দি গ্রামের মাঠে ১০ হাজার, শৈলকুপায় ১০ হাজার ও সদর উপজেলায় ২৫ হাজার গাছ লাগানো হয়।
চাষিরা জানায়, অনেক আশা নিয়ে মাঠের পর মাঠ জুড়ে লাগানো হয়েছিল সৌদি আরবের খির খেজুর গাছ। এখন তরতাজা গাছ আছে কিন্তু কোনো ফল নেই। গাছগুলো ফল ধরার উপযোগী করে তুলতে পারলে লাভের মুখ দেখতে পেত তারা।
নারানকান্দি গ্রামের কৃষক দবিরুল আলম বাংলানিউজকে জানান, ১৩ বছর আগে বনবিভাগের পক্ষ থেকে নারানকান্দি গ্রামের বেলে মাঠটি জরিপ করা হয়। পরে, তাদের সহযোগিতায় লাগানো হয় সৌদি আরবের এ খেজুর গাছ। সে সময় বন বিভাগের সঙ্গে কথা হয়, খেজুর গাছ থেকে শতকরা ৬০ টাকা পাবেন কৃষক, বাকি ৪০ টাকা বনবিভাগ।
‘তাদের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিন বিঘা জমিতে খেজুর গাছ লাগাই। আমাকে অনুসরণ করে গ্রামের আরো ১৩ জন কৃষক খেজুর গাছ লাগায়। ২/১ বছর খোঁজ নেওয়ার পর এখন আর কোনো কর্মকর্তা খোঁজ-খবর নেন না’।
কৃষক জুয়েল বাংলানিউজকে জানান, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ২০০২ সালে তিনি তিন বিঘা জমিতে খেজুর বাগান করেন। এরপর ১৩ বছর ধরে তিনি বাগানের পরিচর্যা করে আসছেন। এখন পর্যন্ত গাছে ফল ধরেনি।
বাগান করার আগে বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, পাঁচ বছর পর গাছে ফল ধরবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ফলের দেখা নেই। বাগানের গাছগুলো ৪/৫ ফুট লম্বা হওয়ার পর বৃদ্ধি থেমে গেছে। বনবিভাগের কেউ কোনো খোঁজ খবর নেয় না।
ঝিনাইদহ বন সমপ্রসারণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ২০০২ সালে জীব ও বৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রকল্পের অধীন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার নারানকান্দি গ্রামে ১০ হাজার, শৈলকুপা উপজেলার গোবিন্দপুর ১০ হাজার, সদর উপজেলার আমতলা, মোকিমপুর, আশুরহাট, লক্ষীপুর, ডেফলবাড়িয়া, নলডাঙ্গা এলাকায় ২৫ হাজার খেজুরের চারা লাগানো হয়।
প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব খেজুর গাছের আর কেউ খোঁজ খবর রাখে না বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৫
এমজেড/