ঢাকাঃ ১৫ জুলাই (২৭ রমজান) ঈদের ছ’টি দেয়া হয় রাজধানীর মালিবাগ এলাকার আরএম ফ্যাশনে। ঠিক তার পরের দিনই কারখানা বন্ধের ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়।
রুনা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কারখানায় ২৮ রোজায় (১৬ জুলাই) ঈদের ছ’টি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কারখানায় মালিক পক্ষের লোকজন বলেন আমরা যদি ২৭ রোজার মধ্যে বেশি কাজ করে অর্ডারের কাজ শেষ করতে পারি তাহলে একদিন আগেই কারখানা ছ’টি দেয়া হবে। সেই অনুযায়ী শ্রমিকরা বাড়তি সময় কাজ করে ১৫ তারিখ ছ’টিতে কারখানা ত্যাগ করেন।
অনেক শ্রমিক রাতেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। আর আমরা যারা পরের দিন বাড়ি যাব বলে ঠিক করেছিলাম তাদের আর যাওয়া হয়নি। ১৬ তারিখ হঠাৎ খবর পাই কারখানা নাকি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা কারখানার সামনে গিয়ে দেখি কারখানায় বন্ধ লেখা ব্যানার ঝুলছে। তারপর থেকেই কারখানা বন্ধ। এখন আমরা কোথায় যাবো কি করব! আমাদের ১৫ দিনের বেতনও বকেয়া রয়ে গেছে। ২৭ তারিখে আমাদের কারখানা খোলার কথা ছিলো।
কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরের দিন শ্রমিকরা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় জিডি করেন বলে জানা যায় শ্রমিকদের সূত্রে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, আমরা এই কারখানায় কাজ করার সময় আমাদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালানো হতো। আমরা তখনই কয়েকবার মামলা করতে চেয়েছি। কিন্তু মালিকদের ভয়ে করা হয়নি। কিন্তু কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে আমরা ১৭ জুলাই থানায় জিডি করেছি। কারখানা যদি মালিকপক্ষ বন্ধ করে দিতে চান তাহলে তো আমাদের কিছু করার থাকবে না। কিন্তু আইন অনুযায়ী আমাদের পাওনাদি মিটিয়ে দিতে হবে।
গা ঢাকা দিয়ে আছে মালিকপক্ষের লোকজন। কয়েক দফা চেষ্টা করেও মালিকপক্ষের কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কোনো নোটিশ না দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেয়া শ্রম আইনের লঙ্ঘন বলে জানান টেক্সটাইল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আরএম ফ্যাশনের শ্রমিকদের কোনো নোটিশ ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা কোনো ক্রমেই আইন অনুযায়ী হয়নি।
বরং শ্রমিকদের ২৭ জুলাই কারখানার খুলে দেয়ার আশ্বাসে ১৬ তারিখ কৌশলে তাদের পাওনাদি না দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় শ্রম আইন লঙ্ঘন হয়েছে। আমরা বিজিএমইএ’তে এ বিষয়ে দু’একদিনের মধ্যেই অভিযোগ করবো। দেখি তারা যদি সমাধান করেন তাহলে তো ভালোই। নয়তো শ্রমিকরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন। আর তার দায় মালিকপক্ষকেই নিতে হবে।
অন্যদিকে ঈদের ছুটি মাত্র শেষ হওয়ায় এখনো বিজিএমইএসহ প্রায় সব অফিস পাড়াতেই কাজকর্ম চলছে ঢিলেঢালাভাবে। এসব বিষয়ে বিজিএমইএ এর কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এখনো উচ্চ পদস্থ সব কর্মকর্তারা পুরোপুরি অফিস করা শুরু করেননি। আর বিজিএমইএ’তে আরএম ফ্যাশন বন্ধ হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হতো।
বাংলাদেশ সময়ঃ ১৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৫
ইউএম/এনএস/