ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আয়কর বিবরণী দাখিল

বাড়ি ভাড়ার তথ্য না দিলে শাস্তি

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫
বাড়ি ভাড়ার তথ্য না দিলে শাস্তি

ঢাকা: করদাতাকে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর বিবরণী দাখিলের সঙ্গে বাড়ি ভাড়ার তথ্য (বাড়ি ভাড়ার ব্যাংক সংক্রান্ত হিসাবের কপি) ও ভাড়ার বিবরণ বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হবে। বিবরণীর তথ্যে গরমিল, ভুল বা তথ্য গোপন করা হলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।



জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ীই করদাতাকে এ নির্দেশনা মানতে হবে।
 
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৩৫ সংশোধন করে ৮ নম্বর বিধি অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২২ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি নির্দেশনা জারি করে, এ নির্দেশনা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
 
নির্দেশনায় বলা হয়, ‘বাড়ি ভাড়া জমা করা সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাবের তথ্য সংশ্লিষ্ট উপ-কর কমিশনারকে অবহিত করতে হবে। আয়কর বিবরণী দাখিলের সময় বিবরণীর সঙ্গে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব বিবরণীর অনুলিপি অবশ্যই দাখিল করতে হবে। ’
 
নির্দেশনা অনুয়াযী, বাণিজ্যিক বা আবাসিক বাড়ি ভাড়া মাসিক ২৫ হাজার টাকা হলে সে হিসাব যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে পরিচালনা করতে হবে। আইন অমান্য করলে মোট আয়ের ৫০ শতাংশ জরিমানা ও শাস্তির বিধান রয়েছে।
 
বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত করাঞ্চলের একজন সহকারী কর কমিশনার বাংলানিউজকে বলেন, জরিপে পাওয়া সব বাড়ি মালিকের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। এসব বাড়ির মালিক আয়কর বিবরণীতে বাড়ি ভাড়ার বিষয় উল্লেখ ও বাড়ি ভাড়ার ব্যাংক লেনদেন সংক্রান্ত কপি জমা না দিলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।
 
তিনি বলেন, সারাদেশে জরিপ অব্যাহত রয়েছে। জরিপে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাড়ির মালিক বের হয়ে আসছে। সব আয়কর বিবরণী যাচাই হবে বলে কোনো বাড়ির মালিক বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত ভুল তথ্য দিয়ে বা তথ্য গোপন করে রেহাই পাবে না।
 
এদিকে, বছরখানেক আগে নির্দেশনা দেওয়া হলেও বেশিরভাগ বাড়ির মালিক বাড়ি ভাড়ার লেনদেন ব্যাংকে করছেন না বলে অভিযোগ করে আসছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
 
তারা বলছেন, ব্যাংকে বাড়ি ভাড়া জমা ‘দেখভালে’ নিয়োজিত কর্মকর্তারা তদন্তে গিয়ে ‘প্রভাবশালী’ বাড়ির মালিকদের প্রশ্ন ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।
 
অন্যদিকে, এনবিআর’র জরিপে সারাদেশে পাঁচ লাখের বেশি বাড়ির মালিকের সন্ধান পাওয়া যায়, যাদের ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর বা ই-টিআইএন নেই। এদের বেশিরভাগই ঢাকা ও চট্টগ্রামের।
 
এ সুযোগে কিছু বাড়ির মালিক আয়কর বিবরণী দাখিল করলেও বাড়ি ভাড়ার ওপর কর না দিয়ে বছরের পর বছর ফাঁকি দিয়ে আসছেন।
 
এসব বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আয়কর বিবরণীতে বাড়ি ভাড়ার ভুল তথ্য দিয়ে কোনো বাড়ি মালিক পার পাবে না। সব তথ্য যাচাই করা হবে।

কর প্রদানে সক্ষম বাড়ি মালিকদের করের আওতায় আনতে জরিপ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এনবিআর সূত্র জানায়, আয়কর অধ্যাদেশ অনুয়াযী, করদাতারা ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ব্যক্তিশ্রেণীর আয়কর বিবরণী দাখিল করতে পারবেন।

সূত্রটি বলছে, অনেক করদাতা শুধু সেপ্টেস্বরে আয়কর বিবরণী দাখিল করা যায় বলে জানেন। প্রচারের অভাবে করদাতারা এমন বিভ্রান্ত হন।
 
সূত্র জানায়, ‘সার্বজনীন স্বনির্ধারণী’ পদ্ধতিতে করদাতারা আয়কর বিবরণী দাখিল করে আসছেন। এ হিসেবে বহু করদাতা বিবরণীতে দেওয়া তথ্য অনুসারে কর দিয়ে থাকেন। বাধ্য হয়ে কর্মকর্তারাও তা মেনে নিয়ে বিবরণীর প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দিয়ে দেন। ফলে বহু করদাতা তথ্য গোপন করে বছরের পর বছর কর ফাঁকি দিয়ে আসছেন।
 
এভাবে কর ফাঁকি রোধে চলতি অর্থবছর থেকে সকল আয়কর বিবরণীর তথ্য যাচাই না হওয়া পর্যন্ত প্রাপ্তি স্বীকারপত্র না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে এনবিআর।
 
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৫
আরইউ/এইচএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।