পার্বতীপুর (দিনাজপুর): প্রয়োজনীয় খনন উপকরণ ও যন্ত্রের অভাবে নতুন স্টোপ (সুরঙ্গের ধাপ) উন্নয়ন করতে না পারায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনিতে পাথর উৎপাদন দুই তৃতীয়াংশ হ্রাস পেয়েছে।
খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) শনিবার (০১ আগস্ট) থেকে দৈনিক তিন শিফটের স্থলে এক শিফটে পাথর উত্তোলন করছে।
খনি ভূগর্ভে বর্তমান উৎপাদনশীল স্টোপে উত্তোলনযোগ্য পাথরের মজুদ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে আসায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরফলে প্রতিদিন যেখানে গড়ে ৩ হাজার ৬শ মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করা হতো, সেখানে শনিবার উত্তোলন করা হয়েছে ১ হাজার ২২৬ মেট্রিকটন পাথর।
খনি কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ভারী খনন যন্ত্র ও খুচরা যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, খনিতে দুটি শিফট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৫শ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এখন এসব শ্রমিকদের পরিবারে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অব্যাহত লোকসানের মুখে বন্ধ হওয়ায় উপক্রম হওয়ায় ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকায় ৬ বছরের জন্য খনির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের জেএসসি ট্রেস্ট সকটোস্ট্রয় ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া করপোরেশন লিমিটেড নিয়ে গঠিত জিটিসিকে। জিটিসি ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করে এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি উৎপাদনে যায়। উৎপাদন শুরুর ৬ মাসের মধ্যে খনিতে তিন শিফট চালু করে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করে আসছিল জিটিসি।
সূত্র মতে, খনি ভূগর্ভে নতুন স্টোপ উন্নয়নের জন্য ভারী খনন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। চুক্তি অনুযায়ী খনন উপকরণ সরবরাহের কথা খনি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু জিটিসি বার বার তাগাদা দিলেও খনি কর্তৃপক্ষ ৭ মাসেও তা আমদানির উদ্যোগ নেয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির প্রতিনিধি ও জার্মানিয়া করপোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম কাজী বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে পুরাতন উপকরণ ও যন্ত্রাংশ দিয়ে কোনোরকমে এক শিফটে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এভাবে এক থেকে দেড় মাস পাথর উত্তোলন করা যাবে।
তিনি বলেন, দুই শিফট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৫শ শ্রমিককে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এসব শ্রমিককে শুধু আগস্ট মাসের মূল বেতন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
জানতে চাইলে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মীর আব্দুল হান্নান দুই শিফট বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, পাথর উত্তোলন যাতে বন্ধ না হয় সেজন্য শিগগির প্রয়োজনীয় ভারী খনন যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করা হবে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ আসলেই একসঙ্গে চারটি স্টোপ উন্নয়ন করে তিন শিফটে পুরোদমে উৎপাদন শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৫
এসআর