ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চিংড়ি চাষে পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধি, না মানলে ব্যবস্থা

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০১৫
চিংড়ি চাষে পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধি, না মানলে ব্যবস্থা

ঢাকা: ঘের দখল অথবা সঠিক মালিকানা না থাকা সত্ত্বেও জোর করে কেউ কেউ চিংড়ি চাষ করেন। কেউবা এ মাছ চাষ করতে গিয়ে করছেন পরিবেশ দূষণ।

অনেকেই আবার চিংড়ি মাছের ভেজাল খাদ্য বাজারজাত করছেন।

অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদেরও দেওয়া হয় না ন্যায্য পারিশ্রমিক। কেউ কেউ রফতানির নিয়ম ভাঙ্গেন। এরকম নানা নিয়ম শৃঙ্খলা বর্হিভূত ঘটনা ও অপরাধের অভিযোগ চিংড়ি চাষকারী, ব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্ট খাদ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় সময়ই অভিযোগ ওঠে।

এসব অপরাধ যেন আর না ঘটে এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রোববার (২ আগষ্ট) থেকে পূর্ণাঙ্গ আচরণ বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। এ আচরণবিধি ভঙ্গ করলে আইন ও বিধি অনুযায়ী নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

মৎস্য অধিদফতর ও মৎস্য গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশনের (বিএসএফএফ) যৌথ উদ্যোগে ‘কোড অব কন্ডাক্ট ফর সিলেক্টেড ১০ সেগমেন্টস অব দ্যা শ্রিম্প অ্যাকুয়াকালচার ইন্ড্রাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ’ নামে এ আচরণ বিধি প্রণয়ণ করা হয়েছে।

রোববার (০২ আগষ্ট) মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, চিংড়ির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসায়ীদের সচেতন ও সঠিক নিয়ম মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধি প্রণয়ণ হলো। আগের চেয়ে বর্তমানে চিংড়ি ব্যবসায়ীরা বেশ সচেতন হলেও এর ব্যাপ্তিটা আরও বাড়াতে হবে।

তিনি জানান, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আইন ও বিধি রয়েছে। যদি কেউ এ আচরণ বিধি ভঙ্গ করেন তাহলে আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বলা যেতে পারে, এ আচরণবিধি একটা সতর্কবার্তা।

বিএসএফএফ’র পরিচালক ড. মাহমুদুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, এ আচরণবিধির মধ্য মধ্যে চাষী, ব্যবসায়ী, ব্যবসা ও খাদ্য প্রতিষ্ঠান, পরিবেশসহ অনেক বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডকে এখানে বিবেচনায় রাখা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তাকে।
এ গবেষকের মতে, দক্ষিণ এশিয়াতে এটিই চিংড়ি শিল্পে সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধি।

আচরণবিধির অন্যতম বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, যেকোনো খামারি অথবা চিংড়ি চাষকারীর মালিকানার প্রামাণিক দলিল থাকতে হবে। পুকুর, ঘের, জমিসহ
চিংড়ির সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব ধরণের প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন ও সনদপত্র নিতে হবে। যে এলাকায় চিংড়ি চাষ করা হবে সেই এলাকার মানুষের সঙ্গে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক সমন্বিত রাখতে হবে।

পরিবেশ বান্ধব ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি এমনভাবে প্রতিষ্ঠান করতে হবে যেন তা স্থায়ী হয়ে টিকে থাকে। চিংড়ি চাষে প্রতিটি পণ্যে উৎস্য শনাক্তকরণের বিশ্বাসযোগ্য নথিপত্র থাকতে হবে। আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিতে হবে। সততা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে ব্যবসা করতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক রোববার (০২ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চিংড়ি শিল্পের উন্নয়নে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। আগের আচরণবিধি ৯টি অধ্যায়ের সঙ্গে একটি নতুন অধ্যায় যোগ করে ১০টি অধ্যায়ের চিংড়ি শিল্পের পূর্ণাঙ্গ আচরণবিধি প্রণয়ণ করা হয়।

অধ্যায়গুলোর মধ্য রয়েছে বাগদা শ্রিম্প (Penaeus monodon) হ্যাচারি, গলদা শ্রিম্প (Macrobrachium rosenbergii) হ্যাচারি, বাগদা শ্রিম্প
(Penaeus monodon) ফার্ম, গলদা শ্রিম্প (Macrobrachium rosenbergii) ফার্ম, শ্রিম্প কালেকশন এন্ড সার্ভিস সেন্টার/ ডিপো, আইস প্ল্যান্ট, ফিশিং বোট এন্ড ভেসেল, শ্রিম্প অর ফিশ ক্যারিয়ার ট্রান্সপোর্ট ভ্যান।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, আগষ্ট ০২, ২০১৫
একে/কেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।