ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রাজশাহীর চাহিদা মিটিয়ে তাজা মাছ যাচ্ছে ঢাকায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৫
রাজশাহীর চাহিদা মিটিয়ে তাজা মাছ যাচ্ছে ঢাকায় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: নানামুখী প্রচেষ্টার ফলে রাজশাহীতে গত দুই বছর থেকে উদ্বৃত্ত মাছ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয়দের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মিটিয়ে রাজশাহী থেকে এখন প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিশেষ প্রক্রিয়ায় পানিসহ অন্তত একশ’ ট্রাক তাজা মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে।



সরকারের মৎস্যবান্ধব কার্যক্রম পরিচালনা,চাষি ও উদ্যোক্তা পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক কারিগরি পরিষেবা প্রদানের ফলে তা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী জেলা মৎস্য অধিদফতর।

এদিকে রাজশাহী জেলা মৎস্য অধিদফতর কর্তৃক সরবরাহকৃত এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৩৫ দশমিক ৪৮ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়েছে। অথচ ২০০৮-০৯ অর্থ বছরেও মাছের উৎপাদন ছিল ২৭ দশমিক ০১ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এবার সারা দেশে মাছের মোট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ দশমিক ০৩ লাখ মেট্রিক টন।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে জানান, ৫১ হাজার ১৫১ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে ২০১৪ সালে ৪৮ হাজার ৬৭৮টি খোলা ও বদ্ধ জলাশয় থেকে ৬৬ হাজার ৮৮২ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে রাজশাহী জেলায় ৬১ হাজার ৭৬৮ মেট্রিক টন মাছ আহরিত হয়। চলতি বছর এখানে ৭০ হাজার ৮৪ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে এবার লক্ষ্য অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি জানান, আনুমানিক ১০ হাজার ৭১৬ হেক্টর জমির ৪৭ হাজার ৯৮৪টি পুকুর এবং খাল-বিল, নদীসহ ৬৯৪টি খোলা জলাশয়ে মাছ চাষ করা হয়। তাই পেশাজীবীসহ বহুলোক মাছ চাষের মাধ্যমে তাদের ভাগ্য বদল করেছে। যা সরকারের দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচিরও সহায়ক।

মাছ চাষ বাড়াতে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক যে বিশেষ ঋণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে দু’বছর থেকে উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সর্বত্র ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।

রাজশাহীর পবা উপজেলায় মাছের গ্রাম খ্যাত পারিলা গ্রামের যুবক সোহরাব হোসেন জানান, মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে বড় মাছ চাষের পরিকল্পনা করেন তিনি। সফলও হন। ১০-১২ কেজি ওজনের মাছও উৎপাদন হয় তার পুকুরে। কিন্তু আগে বড় মাছ নিয়ে বাজারে গেলেই শুনতে হতো বিদেশ থেকে আমদানি করা মরা মাছ। কেউ বিশ্বাস করতে চায়তো না, এটা পারিলার পুকুরের মাছ।

তাই পানিভর্তি ড্রামে করে রাজশাহীর বাজারে নিয়ে যান তাজা মাছ। তাজা মাছ দেখে তার কাছেই ক্রেতাদের ভিড় জমে। আগের তুলনায় কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দামও পাওয়া যায়। এভাবে ধীরে ধীরে রাজশাহীর বাজার পেরিয়ে তাজা মাছ নিয়ে ঢোকেন রাজধানী ঢাকায়। গত চার বছর ঢাকার নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজারে পবার পারিলা গ্রামের তাজা মাছ যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৫
এসএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।