ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের অবাধ বাজারসুবিধা (জিএসপি) ফিরে পেতে রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেনস বার্নিকাট পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তার দেশের সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
বার্নিকাটসহ কানাডার হাইকমিশনার বেনওয়া পিয়েরে লাঘামে ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হান ফুজল এসকায়ার এবং যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধিরা সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মার্সিয়া স্টিফেনস বার্নিকাট।
জিএসপির জন্য বিদ্যমান শর্তের অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নতি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৬টি শর্ত বাস্তবায়নে আরও অগ্রগতি দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা এবং ডাটাবেজ নিয়ে আরও কাজ করতে হবে।
আগামী সেপ্টেম্বরে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পরিদর্শনে এসে তারা শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকারের বিষয়গুলো দেখবে বলে জানান তিনি।
গত ২৯ জুলাই থেকে বিশ্বের ১২২টি দেশ ও অঞ্চলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি পুনর্বহাল করা হয়। এতে স্থান পায়নি বাংলাদেশ।
রানা প্লাজা ধসে ব্যাপক হতাহতের পর ২০১৩ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এটি কার্যকর রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ১৬টি শর্ত আমরা পূরণ করেছি। শুধুমাত্র শ্রম আইনের বিধিমালা তারা বাস্তবায়ন চায়। বিধিমালা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।
‘জিএসপিসহ শুল্ক ও কোটামুক্ত পণ্য রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত তার দেশের সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। ’
সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দলও যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মার্কিন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ পরিদর্শনের পর অগ্রগতি দেখলে জিএসপির বাধা কেটে যাবে বলে আশা করছি।
‘জিএসপি থেকে বাংলাদেশকে বাদ দেওয়ার কোনো কারণ নেই’ উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কী কারণে বাদ দিয়েছে তা তারাই ভালো জানে। এ বিষয়টি রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে।
তবে জিএসপি স্থগিত থাকলেও কোনো সমস্যা নেই বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি কোনো কিছুতে বাধাগ্রস্ত হবে না। জিএসপি ছাড়া যুক্তরাষ্টের সঙ্গে আর কোনো সমস্যা নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডার বাজারে কোনো সমস্যা নেই। শূন্য ডিউটিতে পণ্য রফতানি করতে পারবো।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ৩০ শতাংশ কারখানা ঠিকমতো বেতন-ভাতা দেয় না বলে তাদের যে প্রশ্ন- এই তথ্য সঠিক না বলে আমরা জানিয়েছি। আলোচনায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) ছাড়া আরও কিছু চুক্তির সুবাদে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না বলে জানান মন্ত্রী।
সাক্ষাৎকালে বাণিজ্য সচিব, শ্রম সচিব ও পররাষ্ট্র সচিব উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৫, আপডেট: ১৮০২ আপডেট
এমআইএইচ/এইচএ/এমএ