ঢাকা: ট্যানারি শিল্প সাভারে সরিয়ে নিতে আগামী ডিসেম্বর নয়, ২০১৬ সালের জুলাই পর্য়ন্ত সময় দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
বুধবার(১৯ আগস্ট’২০১৫) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে নদী বন্দর রক্ষা সম্পর্কিত টাস্কফোর্স কমিটির ২৯ তম সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা ঠিক করেছিলাম ডিসেম্বরের মধ্যে ইটিপির নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এখন পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তাই জুলাইয়ে আমরা ট্যানারি শিল্প সরিয়ে নেওয়ার সময় ঠিক করতে যাচ্ছি। শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে।
এই নিয়ে চলতি বছরেই তিন দফা সময় বাড়ানো হলো। এর আগে চলতি বছরের জুনের মধ্যে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিশিল্প সাভারে স্থানান্তরের নির্দেশনা ছিলো। তখন না হওয়া আবার সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ায়। এরপর আবার ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়।
কিন্তু তাতেও সম্ভব না হওয়ায় এবার ২০১৬ সালের জুলাই পর্যন্ত সময় দিতে চায় সরকার। পাশাপাশি হাজারীবাগ এলাকায় ট্যানারি বর্জ্য দূষণ নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবে টাস্কফোর্স।
তিনি বলেন, হাজারীবাগে ট্যানারি মালিকদের জায়গা থাকলেও তারা এখানে ব্যবসা করতে পারবে না। ট্যানারির ব্যবসা করতে হলে তাদের সাভারে যেতেই হবে।
এদিকে ঢাকা চারপাশের চারটি নদী রক্ষায় টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ২০ কিলোমিটার এলাকায় নদীর পারে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
একই সাখে আরো ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকার চারপাশের নদীতে ১৪০ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। এই সীমানায় ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে পারলে নদী রক্ষায় তা গুরু্ত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
র্যাব ও নৌ পুলিশের জায়গা নিয়ে দীর্ঘ দিনের সৃষ্ট জটিলতার অবসান ঘটছে এবার। নদীর ওই পারে কেরানীগঞ্জে ১৫ একার জায়গার ওপর র্যাব ও নৌ-পুলিশের অফিস হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এজন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ আরো কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। র্যাবের জন্য ১০ একর এবং নৌ-পুলিশের জন্য দেওয়া হচ্ছে ৫ একর জায়গা।
দখলদার উচ্ছেদে শিগগিরই অভিযান
টাস্কফোর্স এ পর্যন্ত ঢাকার চারপাশের নদীর ১৮০ একর জায়গা অবৈধ দখল মুক্ত করেছে। এপর্যন্ত ৮২৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া ২১৮ জন অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে শিগগিরই কাউকে না জানিয়ে অভিযানে যাবে টাস্কফোর্সের সদস্যরা। তাৎক্ষণিক অভিযানে যাকে পাওয়া যাবে মোবাইলকোর্টেaর মাধ্যমে তারই শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
নদী দখলে ম্যাটাডর বলপেন
ম্যাটাডর বলপেন গ্রুপের বিরুদ্ধে নদীর জায়গা দখলের অভিযোগ এনে মন্ত্রী বলেন, ম্যাটাডর বলপেন গ্রুপ অত্যান্ত সুকৌশলে নদীর জায়গা দখল করে সুসজ্জিত মসজিদ নির্মাণ করেছে। তারা একটি ব্রিজের এক চতুর্থাংশ দখল করে ভবন করেছে। এরপাশেই মসজিদ। এই মসজিদকে জায়গা দখলের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এজন্য এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।
বুড়িগঙ্গার আfদি চ্যানেল উদ্ধারে নদী রক্ষা জাতীয় কমিশন চেয়ারম্যানসহ কয়েকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে যেসব এলাকায় নদীর সীমানা পিলার নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তা নিরসনে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী সিএস ও আরএস ম্যাপ দেখে পুনরায় সীমানা পিলার স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৫/ আপডেটেড- ১৩৫৮ ঘণ্টা
এসএম/এনএস
** ট্যানারি শিল্পনগরে নতুন দুয়ার