ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

টিপিপিতে ভিয়েতনাম, আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
টিপিপিতে ভিয়েতনাম, আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা ছবি: ফাইল ফটো

ঢাকা: প্রস্তাবিত ট্রান্স-প্যাসেফিক পার্টনারশিপে (টিটিপি) নাম রয়েছে ভিয়েতনামের। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি নিয়ে আশঙ্কায় পড়েছে দেশের ব্যবসায়ী মহল।



বিজিএমইএ থেকে জানা যায়, টিপিপি’তে ভিয়েতনাম অন্তর্ভুক্ত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ মোট ১১টি দেশ তারা তাদের পণ্য শুল্কমুক্তভাবে রফতানি করতে পারবে। বাংলাদেশের মোট পোশাক রফতানির ৪০ ভাগই যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না।

অন্যদিকে, পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম ভিয়েতনাম। তাই টিপিপি’র মাধ্যমে ভিয়েতনাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত ছাড় পেলে বাংলাদেশের পোশাক রফতানির ৪০ শতাংশ হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন পোশাকশিল্প ব্যবসায়ীরা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রফতানি করা ওভেন পোশাক ও নিটওয়্যারের ৩০ দশমিক ৩৯ শতাংশ ও ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশই রফতানি হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি (অর্থ) রিয়াজ-বিন-মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, টিপিপি’তে ভিয়েতনাম অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে, এটি সত্যি আমাদের জন্য একটি আশঙ্কার খবর।

তিনি বলেন, এত ধাক্কার পরেও আমরা পোশাক শিল্পের রফতানির বাজারে টিকে ছিলাম আমাদের প্রোডাকশন ক্যাপাসিটির কারণে। কিন্তু, ভিয়েতনাম যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে যায়, তাহলে তারা তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করবে। অন্যদিকে, শুল্ক না দেওয়ার ফলে তাদের পণ্যের মূল্য এমনিতেই কমে যাবে। এ বিষয়ে সরকারের মনোযোগ দেওয়া উচিত।

বেসরকারিভাবে তারা কিছু করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে এ বিষয়ে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো’র (ইপিবি) তেমন কিছুই করার নেই বলে জানান ইপিবি’র সহসভাপতি শুভাশিস বসু।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ইপিবি রফতানি কীভাবে বিভিন্ন দেশে বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে কাজ করে। কিন্তু টিপিপি মানে সরকার টু সরকার চুক্তি। এ বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, তা আমরা বলতে পারবো না।

ইপিবি থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছর ২০১৪-১৫-এর জুলাই-মে মাসে দেশের মোট রফতানির ১৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ রফতানি হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যার মূল্যমান ৫ হাজার ১৯৭ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলার।

এর মধ্যে ওভেন পোশাক ৩ হাজার ৫৫২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার, নিটওয়্যার ১ হাজার ১৭০ দশমিক ৬২ মিলিয়ন ডলার, হোম টেক্সটাইল ১৫০ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ডলার, ক্যাপ ৪৪ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার, হিমায়িত চিংড়ি ৩৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হয়েছে।

প্রসঙ্গত, টিপিপি হলো প্রস্তাবিত এমন একটি চুক্তি, যার মধ্যে ১২টি দেশ তাদের অভ্যন্তরে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ নানা ধরনের উন্নয়নের কাজ করবে। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১২টি দেশের নিজেদের অভ্যন্তরে রফতানির জন্য তাদের কোনো ধরনের শুল্ক আরোপ করা হবে না। টিপিপি’তে প্রস্তাবিত ১২টি দেশ হলো- অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, কানাডা, চিলি, জাপান, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, পেরু, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম।

বাংলাদেশ সময়:০৮২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
ইউএম/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।