ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফের নিয়োগ পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিতর্কিত ডিজি কাশেম!

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
ফের নিয়োগ পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিতর্কিত ডিজি কাশেম!

ঢাকা: রাজধানীর দিলকুশায় সানমুন গ্রুপের নির্মাণাধীন ভবন সানমুন স্টার টাওয়ার, বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য অতিরিক্ত টাকায় ভাড়া নিয়ে বিতর্কে পড়েছিলেন ডেপুটি গভর্নর  (ডিজি) মো. আবুল কাশেম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এরকম বিতর্কিত ব্যক্তিকে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারও ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে সরকার।



রোববার (২৩ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে আবুল কাশেমের।

এর আগে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সুপারিশে ১৯ আগস্ট তাকে এক বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।  

অভিযোগ রয়েছে, সানমুন স্টার টাওয়ার ভাড়া নেওয়ার বিরোধিতা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য বিরোধিতা সত্ত্বেও ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের (ডিবিআই) জন্য ওই ভবন অতিরিক্ত টাকায় ভাড়া নেওয়া হয়। এতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন আবুল কাশেম।

তবে শনিবার (২২ আগস্ট) মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে আবুল কাশেম বলেন, সানমুন স্টার টাওয়ার ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে। আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই।

সূত্রমতে, চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক চিঠি দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানায়, ৬ জুলাই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেমের।

মেয়াদ শেষে আবুল কাশেমও সবকিছু গুটিয়ে চলে যান। তারপর থেকে পদটি শূন্যই ছিলো।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন আবুল কাশেম। ২০১১ সালের ৭ জুলাই ডেপুটি গভর্নর হিসেবে তাকে চার বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার। এবারও তাকে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, সানমুন স্টার টাওয়ার ভাড়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে, বিতর্কিত ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেমকে দ্বিতীয় বারের মতো নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে, বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কেউই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেয় সরকার। তার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সার সংক্ষেপ তৈরি করে অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন নেয়। পরে পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।

ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডির ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত নেওয়া হলেও, ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেমের নিয়োগের বেলায় সব যথাযথভাবে হয়নি।

এ বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. এম আসলাম আলম বাংলানিউজকে বলেন, আবুল কাশেমের নিয়োগ আগের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই কার্যকর হবে। তবে সুবিধা পাবেন যোগদানের পর থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয় এর আগেও এরকম গুরুত্বপূর্ণ পদে বিতকির্ত ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছে। সর্বশেষ অগ্রণী ব্যাংকের এমডি আব্দুল হামিদকে নিয়োগ দেওয়া হয়। হামিদের বিরুদ্ধে সানমুন গ্রুপের মালিক মিজানুর রহমানকে ঋণ দেওয়ার সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল সিরাজ উদ্দীন আহমেদ (এসএ) চৌধুরীকে। তার বিরুদ্ধেও ঋণ গ্রহীতার টাকায় প্রকল্প পরিদর্শনের অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ একচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া সাহাবুব আলমের বিরুদ্ধেও শেয়ার কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।