ঢাকা: দেশের বাজার দখলের পর এবার বিশ্ববাজারে পণ্য রফতানির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন। বাংলাদেশি ব্র্যান্ড হিসেবে ওয়ালটনকে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে নিয়ে যেতেই কাজ করছে কোম্পানিটি।
বিশ্ববাজার দখলের চেষ্টায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপ।
রোববার (২৩ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ালটন এ তথ্য জানায়।
ওয়ালটনের এ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে-নতুন কারখানা ও উৎপাদন ইউনিট স্থাপন, নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন, পণ্যের উচ্চমান নিশ্চিত করা, পণ্য মান নির্ণয়ে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণ, বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ও ব্র্যান্ড নিবন্ধন, স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী সার্টিফিকেশন নেওয়া ইত্যাদি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে ওয়ালটন। উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে পণ্য মান উন্নত করা সম্ভব হচ্ছে। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচও কমে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ফ্রিজ, টিভি, এসি মেশিনসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে।
ফ্রিজ উৎপাদনের জন্য নতুন একটি কারখানাও স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন ওই কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রধানত উন্নত বিশ্বের বাজারকে টার্গেট করে নন ফ্রস্ট ফ্রিজের ওই উৎপাদন ইউনিট স্থাপন করা হয়। পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে ফ্রিজ উৎপাদন দ্বিগুণ হবে।
মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক ফ্রিজ রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে ওয়ালটনের। সেই লক্ষ্যে নিজস্ব বিক্রয় ব্যবস্থার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মার্কেটিং চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফ্রস্ট ফ্রিজের উৎপাদনও বাড়ানো হচ্ছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ফ্রিজের মতো টিভি সেট বিক্রিতেও ওয়ালটন বাংলাদেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড দাবি করে ওয়ালটনের কর্মকর্তারা জানান, এ দু’টি পণ্যের সিংহভাগ মার্কেট শেয়ার এখন ওয়ালটনের। এ অবস্থায় নতুন পিকচার টিউবে আধুনিক সিআরটি টিভি তৈরি হচ্ছে। যা ভারত নেপালসহ কয়েকটি দেশে রফতানি হচ্ছে। সাশ্রয়ী মূল্যে এলইডি টিভি বাজারে এনেছে ওয়ালটন। পর্যায়ক্রমে এলইডি টিভির দাম আরও কমানো হবে।
তারা বলেন, এসি সম্পর্কে যারা ভালো জানেন তাদের পছন্দের শীর্ষে ওয়ালটন। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এসি মেশিনের মান আরও উন্নত করা হয়েছে। মোটরসাইকেল উৎপাদনেও দেওয়া হয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।
এছাড়া, আগামী বছর থেকে এশিয়ার সর্বোচ্চ মানের কম্প্রেসার তৈরি হবে বাংলাদেশে। বিশ্বের সবচেয়ে খ্যাতনামা জার্মান প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তি এবং মেশিনারিজের সমন্বয়ে বছরে ৪০ লাখ কম্প্রেসার তৈরি হবে। যার ২৫ লাখ থাকবে রফতানির জন্য।
বৈশ্বিক বাজার সম্প্র্রসারণে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগ তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে। বাজার সম্প্রসারণ, পর্যবেক্ষণ ও সম্ভাবনাকে অধিক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা দাবি করেন।
ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যের ওমান, বাহারাইন ও ইয়েমেনসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বাজারকে টার্গেট করে রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের কার্যক্রম চলছে। বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পণ্যের পাশাপাশি যন্ত্রাংশ রফতানির অর্ডার আসছে। এটা শুধু ওয়ালটন নয়, দেশের জন্যও সুসংবাদ। সেই সঙ্গে বিদেশের ইলেকট্রনিক্স মেলা ও সেমিনারে অংশগ্রহণের পাশাপাশি বর্হিবিশ্বে প্রচারণামূলক কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, বাংলাদেশের বাজারে ওয়ালটন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু বাংলাদেশ নয়, এখন আমাদের টার্গেট বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়া। এজন্য কারখানা স্থাপন, পণ্যের মানোন্নয়ন, বাজার সম্প্রসারণসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
পিআর/টিআই