ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেসিক ব্যাংক কেলেংকারি

দুদকের তদন্তে অসন্তোষ সংসদীয় কমিটির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৫
দুদকের তদন্তে অসন্তোষ সংসদীয় কমিটির

ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিদের্শে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশনের(দুদক)। আর মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই এই তদন্ত করা হয়।

অনিয়মের মূল হোতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদকে বাচাতে তদন্ত গাফিলতি করা হয়েছে বলে মনে করছে কমিটি। এজন্য কমিটির পক্ষ থেকে আরো একটি তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কমিটির আগামী বৈঠকে চেয়ারম্যানসহ পরিচালনা পষর্দের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত ও করনীয় ঠিক করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বেসিক ব্যাংক নিয়ে নতুন কমিটি এই প্রতিবেদন দেবে।  
 
বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে দুদকের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
 
বুধবার(২৬ আগস্ট’২০১৫) কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, দুদক বেসিক ব্যাংক নিয়ে যে তদন্ত করেছে সেখানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও চেয়ারম্যানকে দায়ী করা হয়নি। ’
 
তিনি বলেন, ‘দুদক যদি না পারে তাহলে আমরা তদন্ত করবো। সেই তদন্তের ফলাফল জাতির সামনে প্রকাশ করবো। বিবেকের তাড়নায় আমরা সেটা করবো। ’
বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
আব্দুর রাজ্জাক আরও বলেন, ‘আমরা ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজমেন্টের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছি। ওই সময় বেসিক ব্যাংকে যেসব অনিয়ম হয়েছে সেগুলো ব্যাংক কোম্পানি আইনসহ প্রচলিত আইনের কোন কোন বিষয় ভঙ্গ হয়েছে প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। ’
 
ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের সঙ্গে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের দায়ও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
 
অনিয়মের দায় পর্ষদ এড়াতে পারে না। এছাড়া পর্ষদের এজেন্ডা ঠিক করেন চেয়ারম্যান। তার দায়তো আছেই। পর্ষদও দায় এড়াতে পারে না।
 
সংসদীয় কমিটির কার্যপত্রের মাধ্যমে জানা যায়, বেসিক ব্যাংকে ২০১০-১৪ সালে সংঘটিত অনিয়ম ঋণ জালিয়াতির বিবরণ নিয়ে ১৩টি অভিযোগ প্রমাণিত বলে জানানো হয়। এরমধ্যে জাল ও ভুয়া সনদের মাধ্যমে চাকরি দেওয়া। কোন কোন সভায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টি পর্যন্ত এজেন্ডা অন্তর্ুক্ত করে পর্ষদ সভা আহ্বান বা এজেন্ডার বাইরের বিষয় কোন রকম আলোচনা ছাড়াই অনুমোদিত হিসেবে কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্তকরণ।

অপ্রয়োজনে অধিক সংখ্যায় গাড়ি ক্রয়, পর্দ সদস্যদের আত্মীয়দের অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া। এছাড়া ৭৭টি কোম্পানির লোন দেওয়া হয়েছে যেগুলোকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। এসব অভিযোগ প্রমাণিত বলে কমিটিতে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপ-সচিব মো. মতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনের একটি কপি বাংলানিউজের কাছে রয়েছে।
 
আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটি সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, নাজমুল হাসান, টিপু মুন্সী, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবং শওকত চৌধুরী বৈঠকে অংশ নেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৫
এসএম/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।