হিলি (দিনাজপুর): ভারত সরকারের বেধে দেওয়া রফতানি মূল্যেই (প্রতি মেট্রিকটন ৭০৫ মার্কিন ডলার) আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি করায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে বন্দর এলাকায় পেঁয়াজের মজুদ বেড়ে যাওয়ায় এবং ক্রেতা সংকটের কারণে দু’দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
এর আগে সোমবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ভারতের বাজারে পেঁয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি রুখতে ও পেঁয়াজ রফতানিকে নিরুৎসাহিত করতে ভারত সরকার এর রফতানি মূল্য ৪৩০ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৭০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে।
বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় পেঁয়াজের রফতানি মূল্যবৃদ্ধির কারণে হিলি বন্দর দিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। পরে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন মূল্যেই পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। সেদিন বন্দর দিয়ে ৪ ট্রাকে ৭৫ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল। বুধবার বন্দর দিয়ে ২১ ট্রাকে প্রায় ৪শ মেট্রিকটনের পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ১৬ ট্রাকে প্রায় ৩শ টনের মতো পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন হিলি স্থলবন্দর ঘুরে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি করা বেলোরি ছোট জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে (ট্রাক সেল) ৫২ টাকা থেকে ৫৩ টাকা দরে। একই জাতের মোটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকা থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে।
পাটনা জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৫০ টাকা থেকে ৫১ টাকা দরে। ইন্দ্রো জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫১ টাকা থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে। যা প্রকারভেদে গত দু’দিন আগে বিক্রি হয়েছিল ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে।
এদিকে বাংলা হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে খুচরাতে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা দরে। আর দেশি জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।
দু’দিন আগে আমদানি করা এসব ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আর দেশি জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন বাংলানিউজকে জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে ভারত সরকারের বেঁধে দেওয়া বাড়তি মূল্যেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। যার ফলে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে।
তবে হঠাৎ করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ার ফলে পাইকারদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে বন্দর এলাকায় পেঁয়াজের তেমন ক্রেতা না থাকায় খানিকটা কম দামেই আমদানি করা এসব পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানালেন তিনি।
তিনি আরও জানান, বন্দর দিয়ে আমদানি স্বাভাবিক থাকায় ইতোমধ্যেই বন্দরের বিভিন্ন আমদানিকারকদের গুদামে পেঁয়াজের মজুদ বেড়ে গেছে। আর এটাতো কাঁচামাল, যার কারণে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হওয়ার ভয়ে আমদানিকারকরা কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে পেঁয়াজের বাজার দর এমনটাই থাকবে বলে তিনি জানান।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) মনিরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দরের ভেতরে পেঁয়াজের গাড়ি প্রবেশের পর কাঁচা পণ্য হওয়ায় অতি দ্রুত পরীক্ষণ, শুল্কায়ন সম্পূর্ণ করে পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড়করণ দেওয়া হয়ে থাকে। গতকাল এ বন্দর দিয়ে ২১ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৫
এসএইচ/