ডেমরা: পাটের ওপর নির্ভর করে জীবনধারণ করছেন কয়েক লাখ কৃষক ও পাটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অথচ বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) কাছে এ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কৃষকদের পাওনার পরিমান ১০০ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী ও পাট চাষী সমিতির সম্পাদক মো. হারুন-উর-রশীদ।
ডেমরার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে কথা হয় মো. হারুন-উর-রশীদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজে বলেন, বিজেএমসি বিভিন্ন এলাকায় তাদের কার্যালয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কাছ থেকে পাট সংগ্রহ করে থাকে। পাটের একটা বড় অংশ বাকিতেই বিজেএমসি’কে দিতে হয়। পাট বিক্রির টাকা থেকে এসব দরিদ্র মানুষের সংসার চলে। অথচ তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করছে না বিজেএমসি। ক্ষুদ্র পাট ব্যবসায়ী ও কৃষকদের বিজেএমসি’র কাছে পাওনা প্রায় ১০০ কোটি টাকা। অথচ তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও লাভ হচ্ছে না।
অন্যদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বিজেএমসি’র পাঁচ পরিচালকের একজন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকদের অভিযোগ সত্য। তাদের পাওনার পরিমান ১০০ কোটি টাকার বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিজেএমসি’তে সরকার যে বরাদ্দ দেয়, তা যথেষ্ট নয়। ঋণ পরিশোধ করতে যে পরিমান আর্থিক সামর্থ্য প্রয়োজন, তা আমাদের কাছে নেই। কৃষকদের সমস্যা আমরা বুঝতে পারলেও কিছু করার নেই। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ও পরিচালক (অর্থ) ছাড়া আর কারও গণমাধ্যমের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলার অনুমতি নেই।
তবে এ বিষয়ে বিজেএমসি’র পরিচালক (অর্থ) সিরাজুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মন্তব্য করা আমার এখতিয়ারের বাইরে। কিছু জানতে হলে চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
কিন্তু বিজেএমসি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হুমায়ূন খালেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করার হলেও তা সম্ভব হয়নি।
বিজেএমসি থেকে জানা যায়, বর্তমানে সংস্থার অন্তর্ভুক্ত পাটকলের সংখ্যা প্রায় ২৫টি। গোটা কয়েক ছাড়া প্রায় সব কারখানাই লোকসান গুনছে। সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে কারখানাগুলো এখনো সচল রাখা হয়েছে। ফলে বাকিতে পাট কিনলেও কৃষকদের প্রায় ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে পারছে না বিজেএমসি।
বিজেএমসি’র পাটকলগুলোতে প্রায় ৩ লাখ লোক কাজ করছে। আর এদের মুখের দিকে তাকিয়ে পাটকলগুলোর বিষয়ে সরকার কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫
ইউএম/আরএম