ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪, অতিরিক্ত কর্মসংস্থান ১ কোটি ২৯ লাখ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪, অতিরিক্ত কর্মসংস্থান ১ কোটি ২৯ লাখ পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

ঢাকা: সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৯ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং ৭ দশমিক ৪ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি’র চূড়ান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।



আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান তৈরি এবং আয় বৈষম্য কমিয়ে আনা। পরিকল্পনা মন্ত্রী এ সময় বলেন, “দারিদ্র্যের হার ৬ দশমিক ২ ভাগ কমিয়ে বর্তমানের ২৪ দশমিক ৮ থেকে ১৮ দশমিক ৬ ভাগে নিয়ে আসা হবে। শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৬ ভাগ থেকে ১১ দশমিক ৯ ভাগে উন্নীত করা হবে। ”

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষিভিত্তিক শিল্পকে প্রাধান্য দেয়া হবে উল্লেখ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “এবারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষি প্রক্রিয়াজতকরণকে সর্বাধিক সুযোগ দিতে কৃষি প্রক্রিয়াজাত যন্ত্রপাতি ও উপকরণ আমদানিতে শূন্য কর সুবিধার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ”

এবারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাজেটের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরিকল্পনা দলিলকে তেরোটি খাতের আওতায় প্রণয়ন করা হয়েছে।

এ বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, “এতে করে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাজেট বরাদ্দের মধ্যে সমন্বয় সাধিত হবে। একই সঙ্গে বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করা সম্ভব হবে। ”

‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিসংখ্যান ভালো নয়’ এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ভূ- অবস্থানগত কারণেই বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উৎকৃষ্ট স্থান। এদেশের মানুষ যারা বিদেশে বিনিয়োগ করছেন তারা একযুগ পর এদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও সুযোগ পাবেন না। অন্যেরা ততদিনে সে স্থান পূরণ করে ফেলবে। ”

সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান দেশে আয় বৈষম্য কমে আসছে উল্লেখ করে বলেন, “বর্তমানে রংপুর অঞ্চলে শ্রম মজুরি ২০১৩-১৪ সালের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এটা এ নির্দেশনা দেয় গ্রাম ও শহরের মজুরি দিনে দিনে কমে আসছে। ”

মশিউর রহমান আরও বলেন, “এদেশের টাকা যত বেশি এদেশেই ব্যবহৃত হবে জনগণ ততবেশি এর সুফল পাবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের স্থলভাগ ও সমুদ্র থেকে বিভিন্ন খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও ব্যবহারের স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে। অন্যদিকে সারাদেশে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক কার্যক্রম হাতে নিয়ে জনগণকে প্রশিক্ষিত করে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করতে হবে। ”

স্টিয়ারিং কমিটির সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ও সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘আজকের সভাশেষে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্যে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল (এনইসি)-এর সভায় উপস্থাপন করা হবে’।

সভায় জানানো হয় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সামাজিক ব্যয়ের হার বর্তমানের জিডিপি’র দুই ভাগ থেকে ২ দশমিক ৩ ভাগে উন্নীত করা হবে। একই সঙ্গে গবেষণা ব্যয় জিডিপি’র ০ দশমিক ৬ ভাগ থেকে ১ ভাগে বৃদ্ধি করা হবে।

সভায় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সমুদ্র সম্পদ বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা বলেন।
অপর সদস্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লা আল মামুন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। এর ফলে রপ্তানি পণ্যের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে হলে আমাদের মান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও আধুনিক করতে হবে। ”

সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
এমআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।