ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ জুন ২০২৪, ২০ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধিতে বাধা উচ্চ সুদ হার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধিতে বাধা উচ্চ সুদ হার ড. আব্দুর রাজ্জাক

ঢাকা: বিনিয়োগ না বাড়ার কারণে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়ছে না উল্লেখ করে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ব্যাংকের উচ্চ সুদ হার বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
 
তিনি বলেন, ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ সুদের হারে কেউ ব্যবসা করতে চান না।

ব্যাংকের সুদ হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসা উচিত। সেই সঙ্গে স্প্রেড (আমানত ও ঋণের সুদ হারের ব্যবধান) ৪ শতাংশের মধ্যে থাকা উচিত।
 
শনিবার (২৮ নভেম্বর) বাংলা একাডেমিতে জাতীয় ব্যাংক মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
 
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমাদের প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশে আটকে রয়েছে। প্রবৃদ্ধি না বাড়ার কারণ হলো বিনিয়োগ হচ্ছে না। আর এ বিনিয়োগ না হওয়ার পেছনে দু’টি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা। আর দ্বিতীয় কারণটি হলো ব্যাংকের উচ্চ সুদের হার।
 
তিনি বলেন, ব্যাংকের কাজ শুধু মুনাফা করা না। ব্যাংকের স্প্রেড ৬ শতাংশের ওপরে। পৃথিবীর কোনো দেশে স্প্রেড এতো বেশি নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, স্প্রেড ৪ শতাংশের কম হওয়া উচিত।
 
ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশের কম হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, সুদের হার না কমলে মানুষ কিভাবে ব্যবসা করবেন? এসএমই ব্যবসার কথা বলা হচ্ছে। পোল্ট্রি চাষ, মৎস্য চাষ এতো উচ্চ হারে সুদ দিয়ে করা সম্ভব না।
 
ব্যাংক মালিকদের উদ্দেশ্যে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ব্যাংকের উচিত শুধু মুনাফা করা না, মানুষের সেবা করাও। ব্যাংক মালিকদের উচিত সিএসআর কার্যক্রমে আরও বেশি অংশগ্রহণ করা।
 
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমার বলেন, ব্যাংকিং মেলার আয়োজন সকলের সম্মিলিত স্বীকৃতি। এবারের মেলার যে সীমাবদ্ধতা ছিল আগামীতে তা আশা করি শুধরে যাবে।
 
তিনি বলেন, আমি হয়তো আগামীতে আর থাকবো না। ভবিষ্যতে যারা আসবেন তারা যেন মেলাটা নিয়মিত করেন। এটাই আমার দাবি। সেই সঙ্গে বিভাগীয় শহরেও যেন এ মেলার আয়োজন করা হয়, সে অনুরোধ জানাচ্ছি। মেলা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ আমি থাকাকালে বিভাগীয় শহরে একটি হলেও যেন মেলার আয়োজন করা হয়।
 
গভর্নর বলেন, মেলার মাধ্যমে ব্যাংক ও মানুষের মধ্যে যোগসূত্র হয়েছে। এটি ব্যাংকের পাঠশালা। গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকে গ্রাহকের ৩ হাজার অভিযোগ জমা হয়েছিল। এর ৯৯ শতাংশ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
 
আর্থিক অর্ন্তভুক্তি বাড়াতে ব্যাংকের অলস অর্থে ছোট ছোট ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। এজেন্ট ব্যাংকিং আরও ছড়িয়ে দিতে হবে। শাখা হিসেবে ইউনিলিভার ও ওয়ালটনের মতো কোম্পানির ডিলারকে ব্যবহার করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেন ড. আতিউর।

ব্যাংকারদের উদ্দেশ্যে গর্ভনর বলেন, কাউকে ভয় দেখাবেন না। সবাইকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার চেষ্টা করুন। আমরা ঢাকা শহরের সব ভবনের ছাদে বাগান করার কথা ভাবছি। যাতে তাপমাত্রা শোষণ করে নেওয়া যায়।
 
তিনি বলেন, আমরা গার্মেন্টসগুলোতে গ্রিন ব্র্যান্ডিং করতে চাই। এজন্য ২শ’ মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করা হচ্ছে।
 
সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসানের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরুপাক্ষ পাল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
এএসএস/এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।