ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জুন ২০২৪, ১৭ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহক হয়রানির শীর্ষে সোনালী ও ব্র্যাক ব্যাংক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
গ্রাহক হয়রানির শীর্ষে সোনালী ও ব্র্যাক ব্যাংক

ঢাকা: দেশে কার্যরত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার গ্রাহকরা বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ হাজার ৯৩০টি অভিযোগ করেছেন।

এরমধ্যে এক হাজার ৩শ’ ৮৮টি ফোনে ও দুই হাজার ৫শ’ ৪২টি অভিযোগ এসেছে লিখিতভাবে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে আসা অভিযোগগুলো শতভাগ নিষ্পত্তি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অভিযোগের শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক, সংখ্যা ২৫৬টি। পরের অবস্থানেই রয়েছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, অভিযোগ ১৭৫টি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা রূপালী ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে ১৪৯টি।

অভিযোগের শীর্ষে থাকা প্রথম দশটির মধ্যে অপর ব্যাংকগুলো- অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১৪০টি, ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১২৩টি, জনতা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১০৬টি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৮২টি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৭৯টি, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৭০টি এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৫৯টি অভিযোগ এসেছে।

প্রতিবেদন দেখা যায়, গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত মোট ১৪ হাজার ৯২০টি অভিযোগ এসেছে। যার সবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর মধ্যে টেলিফোনে সাধারণ ব্যাংকিং সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ছিল ৮৪১টি, ঋণ ও অগ্রিম সংক্রান্ত ২০৮টি, কার্ড সংক্রান্ত ৮২টি, মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত ৫২টি, ট্রেড বিল সংক্রান্ত ২১টি, রেমিট্যান্স সংক্রান্ত ৩৮টি ও বিবিধ অভিযোগ ছিল ১৪৬টি।

এছাড়া গতবছর লিখিতভাবে দুই হাজার ৫৪২টি অভিযোগ আসে। এর মধ্যে সাধারণ ব্যাংকিং সংক্রান্ত ৫২০টি, ঋণ ও অগ্রিম সংক্রান্ত ৪৬২টি, স্থানীয় বিল সংক্রান্ত ৪১২টি, বৈদেশিক বিল সংক্রান্ত ৩৬৮টি, কার্ড সংক্রান্ত ১৪৬টি, ব্যাংক গ্যারান্টি সংক্রান্ত ৮৭টি, মোবাইল ব্যাংকিং সংক্রান্ত ৩৯টি, রেমিট্যান্স সংক্রান্ত ২৬টি ও বিবিধ অভিযোগ ছিল ৪৮২টি।

রোববার (২৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটির মোড়ক উন্মোচন করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। যারা ব্যাংকিং খাতের গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে, বেঈমানি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।

একই সঙ্গে প্রতিবছর এধরনের কতজন প্রতারককে কি ধরনের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে তা প্রকাশিত রিপোর্টে তুলে ধরারও নির্দেশ দেন তিনি।

ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় গ্রাহকের হয়রানি ও ঝামেলামুক্ত সেবা প্রদান ব্যাংকিং খাতের একটি অঙ্গীকার হওয়া উচিত। প্রতি তিন মাস পরপর একটি গ্রাহক সমাবেশ করার আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, যাতে করে ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক আরও সৃদৃঢ় হয়।

অদৃশ্য চার্জ (হিডেন চার্জ) সম্পর্কে গর্ভনর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা আছে গ্রাহককে না জানিয়ে কোনো ব্যাংক কোনো প্রকার চার্জ কর্তন করতে পারবে না।

এর আগে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ব্যাংকে হিডেন চার্জ আদায় একটা অপরাধ। যারা এভাবে ফি আদায় করবে সেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জরিমানার বিধান করতে পারে। আমাদের প্রায় সব ব্যাংকের সেবা পণ্যের ধরণ কাছাকাছি, তবে আমাদের ব্যবহার ও সেবার মান দিয়েই গ্রাহক ধরতে হয়। তাই গ্রাহক স্বার্থের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে মইনুল ইসলাম খসরু, মাহবুব আর রহমান ও মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী সেবা গ্রহণে ব্যাংকের হয়রানির বর্ণনা ও বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগের পর সমাধান পাওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক এ কে এম আমজাদ হোসেন। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম রহমানসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।