ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ জুন ২০২৪, ১৭ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মংলা বন্দরে হচ্ছে টার্মিনাল-ইয়ার্ড-কন্টেইনার ডেলিভারি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৫
মংলা বন্দরে হচ্ছে টার্মিনাল-ইয়ার্ড-কন্টেইনার ডেলিভারি

ঢাকা: আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ একটি কন্টেইনার টার্মিনাল, একটি কন্টেইনার ইয়ার্ড ও একটি কন্টেইনার ডেলিভারি যুক্ত হতে যাচ্ছে মংলা বন্দরে। একটি মাল্টি-স্টোরেড পার্কিং ইয়ার্ড নির্মাণসহ পশুর চ্যানেলে রেক অপসারণ করে একটি মোবাইল কন্টেইনার স্ক্যানারও স্থাপন করা হবে।



একই সঙ্গে মংলা বন্দরের প্রধান সড়ক ও বাইপাস সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এতে প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা।

সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ‘মর্ডানাইজেশন অ্যান্ড এক্সপানেশন অব পোর্ট ফ্যাসিলিটি ফর মংলা পোর্ট’ প্রকল্পের ওপর প্রাথমিক উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (পিডিপিপি) বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পিডিপিপি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।

বৈঠকে অংশ নেওয়া পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি না করেই প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। এর যৌক্তিকতা নিয়ে মিটিং হয়েছে। এছাড়া এতো টাকা কিভাবে সংস্থান করা হবে, সে বিষয়ে ইআরডি’র মতামত নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি নিয়ে আরও কয়েকবার বৈঠক করতে হবে।

এদিকে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, মংলা বন্দরের জেটির নিচে জমে থাকা পলি ভেঙে পড়া রোধ করতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  

পরিকল্পনা কমিশনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বৈদেশিক সাহায্য প্রাপ্তির তালিকায় নেই। জাইকা, চায়নিজ প্রিফারেনশিয়াল লোন বা সহজ শর্তে ঋণে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। আগে অর্থায়নের উৎস ঠিক করতে হবে। অর্থায়নের উৎস ঠিক করার জন্য আমরা ইআরডি’কে চিঠি দেবো।

প্রকল্পটি ২০১৬ সালের প্রথম থেকে শুরু হয়ে ২০১৯ সালের জুন নাগাদ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা করছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এ বন্দর বাংলাদেশের দ্বিতীয় এবং দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধান চাবিকাঠি। অথচ ২০০২-০৩ অর্থবছর থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত এটি অবহেলিত ছিল। যে ‍কারণে দেশের আমদানি-রফতানি চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। কিন্তু ভিশন ২০২১ বাস্তবায়ন করতে হলে এ বন্দরের কোনো বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে মংলা বন্দরের প্রতি বিশেষ নজর দেয়। অনেক উন্নয়নমূলক কাজও হয়েছে। পদ্মাসেতু, রামপাল কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ প্রকল্প, খান জাহান আলী বিমানবন্দর ও খুলনা-মংলা রেলপথ নির্মাণ শেষ হলে মংলা বন্দরের চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যাবে। বর্তমানে এ বন্দরের যে ক্যাপাসিটি তাতে অদূর ভবিষ্যতে চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হতে হবে। যে কারণে প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মংলা বন্দরে টার্মিনাল, ইয়ার্ড ও ডেলিভারি কন্টেইনার নেই। অথচ বন্দরটির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছি। নিজস্ব অর্থায়নে ইতিমধেই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রকৌশলীদের মাধ্যমে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করা হয়েছে।

মংলা বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মংলাকে ঘিরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তাই বন্দরের ক্যাপাসিটি বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৫
এমআইএস/আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।