ঢাকা: বাংলাদেশ সরকারের ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জাপান সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ৮ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার বিনিময় নোট ও ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এ ঋণ চুক্তি জাপান সরকারের ৩৬তম ওডিও লোন প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত।
রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতু ওয়াতানাবি সঙ্গে বিনিময় নোট এবং বাংলাদেশস্থ জাইকা অফিসের প্রধান প্রতিনিধি হাইকো হাতিয়েদা ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
জাপানি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ ১৩৩ বিলিয়ন ২৬৫ মিলিয়ন ইয়েন। ঋণের বাৎসরিক সুদের হার ০.০১ শতাংশ। যা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরে পরিশোধযোগ্য।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৬৭ শতাংশ ব্যয় করা হবে ‘ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন’ প্রকল্পে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে জাপানিজ বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। এ প্রকল্পের আওতায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে।
প্রকল্পের অনুকূলে জাইকা কর্তৃপক্ষ ১৫, ৮২৫ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ১০৯ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে।
আরেকটি প্রকল্পের আওতায় শিল্প এলাকায় বিদুৎ সরবরাহের মানোন্নয়ন এবং ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। জাইকা কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পে ২ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে।
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে পশ্চিমাঞ্চলে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৬১টি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পে জাইকা কর্তৃপক্ষ ১ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দেবে। যা মোট ব্যয়ের ৬৫ শতাংশ।
উন্নত স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে আনুমানিক ১ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে ‘মেটারননেল, ন্যাশনাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ (এমএনসিএইচ) অ্যান্ড হেলথ সিস্টেম ইম্প্রুভমেন্ট’ প্রকেল্পে। জাইকা কর্তৃপক্ষ ১ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা প্রদান করবে, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৮১ শতাংশ।
জাইকা ৭৮৫ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিবে ‘আরবান বিল্ডিং সেফটি’ প্রকল্পে। যা মোট ব্যয়ের ৮৬ শতাংশ। এ প্রকেল্প ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আওতাভুক্ত। এ তিন জেলার শহরাঞ্চলের বেসরকারি ভবনের নিরাপত্তার মানোন্নয়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ সুবিধা দেওয়া হবে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৯১২ কোটি টাকা।
প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালী করতে ‘উপজেলা গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পে ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
জাইকা এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৮৫ শতাংশ ঋণ সুবিধা দেবে। সে হিসাবে প্রায় ৯৫৭ কোটি টাকা। উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে এ অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে জাপান বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫
এমএইচপি/টিআই