ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান

ঢাকা: বিনিয়োগে গতি আসছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, এ বছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে (বিবিটিএ) আয়োজিত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স ২০১৫’র দ্বিতীয় ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।



গভর্নর বলেন, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খেলাপী ঋণের হার আমরা এক অংকে নামিয়ে আনতে পেরেছি। খেলাপী ঋণের বিপরীতে প্রভিশন কভারেজ ৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে এখন কোনো তারল্য সংকট নেই। কলমানি রেট মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ।

মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির হার বাড়ছে। সুদহারের স্প্রেড কমে ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ হয়েছে। এই স্প্রেড ক্রমান্বয়ে কমছে। আমাদের বিনিময় হার দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল। মূল্যস্ফীতিও কমছে। বিনিয়োগে গতি আসছে। বিনিয়োগ বাড়লে প্রবৃদ্ধি বাড়বেই। তাই এ বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে উন্নীত হবে, বলেন ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, আমরা উৎপাদনশীল খাতে, বিশেষ করে এসএমই খাতে বিনিয়োগ আরো দ্রুত বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছি। রপ্তানিমুখী শিল্পে স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় তিনশ’ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। দু’শ’ মিলিয়ন ডলারের আরেকটি তহবিল অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
 
ব্যাংকিং খাত শক্তিশালী কি-না তার অন্যতম পরিমাপক হচ্ছে মূলধন পর্যাপ্ততা এমন মন্তব্য করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে বর্তমানে মূলধন পর্যাপ্ততার হার ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ৮ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি।

বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন খুবই প্রাণোদীপ্ত ও স্থিতিশীল এমন মন্তব্য করে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ সফরে এসে প্রথিতযশা বাঙালি অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. কৌশিক বসু বলেছেন, বাংলাদেশে অর্থনীতি এখন উড়ন্ত সূচনার পর্যায়ে রয়েছে। ব্যাংকিং খাতের সূচকগুলো দিন দিনই শক্তিশালী হচ্ছে। ব্যাংকিং খাত এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও ঝুঁকিসহনে সক্ষম।

আতিউর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির আকারও বাড়ছে। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন দরকার সেজন্য ব্যাংকিং খাতকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উৎসাহিত, উদ্দীপ্ত ও কর্তব্য কাজে আরো বেশি মনোনিবেশ করাতে হবে।

বর্তমান পরিবর্তনশীল বিশ্বে আর্থিক খাতের নেতৃত্ব বিকাশের কোনো বিকল্প নেই। এ কারণেই হালে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে দেশে-বিদেশে বেশি বেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বলেন গভর্নর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকটাই বদলে গেছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। হাতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে আধুনিক ও ডিজিটাইজড কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।

অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন সিআইবি, অনলাইন ব্যাংকিং, ই-কমার্স, ইআরপি, কোর ব্যাংকিং সলিউশন, এন্টারপ্রাইজ ডাটা ওয়্যারহাউজ, ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ, রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি ডিজিটাইজড প্রতিষ্ঠান ও গোটা ব্যাংকিং খাতকে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর খাত হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বলেন ড. আতিউর রহমান।

বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির প্রিন্সিপাল কে এম জামশেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫/আপডেট: ১৩১৪ ঘণ্টা
এএসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।