ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলানিউজকে এমডি

ভালো মানের বীজ সরবরাহ-ই ‘লাল তীর’র লক্ষ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
ভালো মানের বীজ সরবরাহ-ই ‘লাল তীর’র লক্ষ্য ছবি: কাশেম হারুন - বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের চাষিদেরকে ভালো মানের বীজ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ‘লাল তীর সিড’ লিমিটেড বিভিন্ন ফসলের একাধিক জাতের বীজ উৎপাদন করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মাহবুব এনাম।
 
দেশের বৃহৎ বীজ উৎপাদনকারী এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, দেশের আবহাওয়া ও মাটির সঙ্গে খাপ খায় এমন বীজ উৎপাদন করে চাষিদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে লাল তীর।

ফলে চাষিরা এ প্রতিষ্ঠানের বীজ ব্যবহার করে ঘরে ‘সোনালী’ ফসল তুলতে পারছেন।
 
রাজধানীর খামারবাড়ি, আ.কা.মু গিয়াস উদ্দিন মিল্কী মিলনায়তনের চত্বরে ‘জাতীয় সবজি মেলা ও প্রদর্শনী ২০১৬’তে লাল তীর সিড লিমিটেডের প্যাভিলিয়নে বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।  
 
প্রদশর্নীর প্রথম দিন রোববার (১৭ জানুয়ারি) তার সঙ্গে আলাপচারিতায় লাল তীর সিড লিমিটিডের বীজের নানা বিষয় ওঠে আসে।
 
মাহবুব এনাম বলেন, লাল তীরের প্রতিটি কর্মীই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও সুশিক্ষিত। আমাদের ২৫ জন কৃষি বিশেষজ্ঞ আছেন যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া মাঠ জুড়ে রয়েছেন একশ’র বেশি কৃষিবিদ।
 
তিনি জানান, উত্তরাঞ্চলের আটটি জেলায় বীজ উৎপাদন হচ্ছে কৃষকদের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে। এতে ওই এলাকায় বীজ উৎপাদনে কৃষকরা অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি ব্যবসায়ী হয়ে উঠছেন। এর ফলে ওইসব এলাকায় ভালো মানের বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করে কৃষির উন্নয়নে ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে।
 
দীর্ঘদিন ধরে এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বীজ নিয়ে কাজ করা এই কর্মকর্তা বলেন, সীমিত জমিতে কীভাবে অধিক সবজির ফলন নিশ্চিত করা যায়, এটা নিয়ে আমরা কাজ করি। এ কারণে গুণগত মানসম্মত বীজ উৎপাদন করে চাষিদের মাঝে সরবরাহ করছি।
 
৩১টি ফসলের ১৮২ জাতের সবজির বীজ সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করে মাহবুব এনাম বলেন, শুধু নিজ দেশে নয় লাল তীরের বীজ বিশ্বেও সমাদৃত। আমাদের টিয়া নামের করলার একটি জাত রয়েছে যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাষিরা আস্থার সঙ্গে ব্যবহার করছেন। এই বীজের গ্রহণযোগ্যতা অনেক ভালো।
 
এছাড়া লাল তীর সিড লিমিটেড বিভিন্ন জাতের সবজির বীজ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বলে জানান তিনি। রপ্তানি করা বীজের মধ্যে অন্যতম হলো টমেটো, বরবটি, লাউ, ঝিঙা, চিচিংগা, জালি, মরিচ, শিম অন্যতম।
 
মাহবুব এনাম বলেন, লাল তীর দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে অবদান রেখে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে। বিভিন্ন অঞ্চলে ৯০০ জন ডিলার ও ১৪ হাজার খুচরা বিক্রেতা রয়েছেন।
 
এছাড়া কৃষকের উন্নয়নে বিভিন্ন পরামর্শমূলক সভা, বীজ বিতরণ, উঠান বৈঠক, ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়সহ নানা বিষয়ে কাজ করছে লাল তীর।
 
সব ধরনের গ্রাহকের কথা বিবেচনায় এনে লাল তীর সিড লিমিটেড বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করে বীজ বাজারজাত করে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
 
তিনি বলেন, অনেকেই বাড়ির ছাদে বা বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ করে থাকেন। তাদের অনেক কম পরিমাণ বীজের দরকার হয়। এ কারণে আমরা বিভিন্ন জাতের সবজির মিনি প্যাকেটের বীজ বাজারজাত করছি।

মাহমুব এনাম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রত্যেক মানুষের যে পরিমাণ সবজি খাওয়া প্রয়োজন আমরা কিন্তু তার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারিনি। এই বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। এছাড়া শিশুরা যেন পুষ্টি সমৃদ্ধ সবজি খেতে পারে সেদিক নিয়েও আমাদের ভাবনা আছে।
 
তিনি জানান, প্রায় দুই কোটি চাষি লাল তীরের বীজ কোনো না কোনোভাবে ব্যবহার করছেন। প্রতিবছর প্রায় শতকরা ১০ ভাগ হারে লাল তীর’র বীজ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। সুতারাং বলা যেতেই পারে এ প্রতিষ্ঠানের বীজের ওপর চাষিদের আস্থা আছে ও বাড়ছে।
 
তাছাড়া উন্নত মানের বীজ সরবরাহ করতে না পারলে এতো দীর্ঘ সময় ধরে কৃষকদের নিয়ে কাজ করা সম্ভবও হতো না। দিনদিন এ প্রতিষ্ঠানের সফলতার গল্প দীর্ঘ হচ্ছে। অনেক বেশি সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে সব শ্রেণির গ্রাহকদের কাছ থেকে।
 
মেলায় লাল তীর সিড প্যাভিলিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯৯৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু দেশের অন্যতম বৃহৎ এই বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের। শুরু থেকেই কৃষকরা এই প্রতিষ্ঠানের বীজের ওপর আস্থা রেখেছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সব শ্রেণির সবজি চাষি লাল তীরের বীজ ব্যবহার করে থাকেন।
 
সবজি মেলা ও প্রদর্শনীতে লাল তীর’র বীজের প্যাভিলিয়নে এ প্রতিষ্ঠানের বীজ সম্পর্কে ধারণা দিতে এক ঝাঁক তরুণ কর্মী কাজ করে যাচ্ছেন। লাল তীরের বীজের সবজিরও প্রদর্শন করা হয়েছে মেলায়।
 
বাংলাদেশ সময়:১০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
একে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।