ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চূড়ান্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬
চূড়ান্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ

ঢাকা: ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে বলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংস্থাটি বলছে, সাময়িক প্রাক্কলনে এ তথ্য পাওয়া গেছে, যা বিগত ৮ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্জন।

এর আগে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্জনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। কিন্তু পূর্বাভাসের থেকেও বেশি হয়েছে।  

বিবিএস সূত্র জানায়, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৬ দশমিক ০১ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। এরপর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৫ দশমিক ০৫, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৫৭, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৪৬, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫২, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৬ দশমিক ০১ এবং  ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে সরকার।

বিবিএস কর্মকর্তারা বলছেন, বর্তমানে জিডিপির আকার ৮ লাখ ২৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কৃষিখাতে জিডিপি অর্জন হয়েছে ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, তবে গত অর্থবছরে ছিল ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি অর্জন কম হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মৎস খাতে ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গতবার ছিল ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

শিল্পখাতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার। এ খাতে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে, যা গেল বার ছিল ৮ দশমিক ১৬।

দেশের মোট ১৫টি প্রধান খাত ও উপখাতের উপর ভিত্তি করে জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ণয় করা হয়েছে। সব থেকে বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে উৎপাদন খাতে, এ হার ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ।

গত বছর একই সময়ে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি খাতেও আশানুরূপ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এখাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ২২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে, গত বছর যা ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ। নির্মাণ খাতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, গতবার ছিল ৮ দশমিক ০৮ শতাংশ।
 
সেবা খাতেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ, গত বছর যা ছিল ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।

সেবা খাতের উপ খাত লোক প্রশাসন ও প্রতিরক্ষা, এই খাতে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ রেকর্ড পরিমাণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এছাড়া হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট খাতে অর্জিত হয়েছে ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ।

সেবা খাতের সব পর্যায়ে বেড়েছে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার। এরমধ্যে শিক্ষা খাতে ৮ দশমিক ০১, আর্থিক খাতে ৭ দশমিক ৭৮, আবাসন খাতে ৪ দশমিক ৪০, স্বাস্থ্য খাতে ৫ দশমিক ১৮ ও সামাজিক খাতে ৩ দশমিক ২৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

তবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে বেশ খারাপ অবস্থানে রয়েছে  পরিবহন খাত। অর্জন কমে হয়েছে মাত্র ৫ দশমিত ৯৬ শতাংশ। গত বছর ছিল ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। কৃষি ও পরিবহন ছাড়া প্রায় সব খাতেই ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে।
 
জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন প্রসঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। সামনে ৭ শতাংশ অর্জন করে দেখাবো।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, চলতি অর্থ বছরের শেষ নাগাদ দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে।

বাড়ছে মাথাপিছু আয়:
প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও। দেশের মানুষের মাথাপিছু বার্ষিক আয় এখন ১ হাজার ৩১৪ ডলার। যা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ১৯০ ডলার।

‘জিডিপি প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়ায় বেড়ে যাবে মাথাপিছু আয়ও,’ বলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
এমআইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।