ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নির্দিষ্ট সময়ে বোনাস দেয়নি ৩০ শতাংশ গার্মেন্টস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৬
নির্দিষ্ট সময়ে বোনাস দেয়নি ৩০ শতাংশ গার্মেন্টস

ঢাকা: ০৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের ঈদ-উল আযহার বোনাস দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। কিন্তু নির্ধারিত তারিখের মধ্যে দেশের ৩০ শতাংশ গার্মেন্টস কারখানার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বোনাস দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন।

ফেডারেশন সূত্র জানায়, আশুলিয়া ও সাভার এলাকার পোশাক কারখানাগুলোতে ০৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হলেও রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ অন্য এলাকার কারখানাগুলোর বেশিরভাগ শ্রমিকই বোনাস পাননি। এসব বিষয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বাংলানিউজকে বলেন, আশুলিয়া ও সাভার এলাকার কারখানাগুলোর শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করেই মালিকপক্ষ দায় এড়াতে চাচ্ছেন। রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত বোনাস পাননি। শ্রম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মালিকপক্ষের বোনাস পরিশোধ করা উচিত ছিলো। আর নির্দিষ্ট সময়ে বোনাস না দেওয়া মানে মালিকপক্ষ সরকারের নির্দেশ মানেন না, যা অন্যায়।

সরেজমিনে রামপুরার আশিয়ানা গার্মেন্টসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার পর্যন্ত বোনাস পাননি কারখানাটির এক হাজার শ্রমিক।

কাকরাইলের ফ্যাশন জোনের শ্রমিকরা পড়েছেন বেশি বিপাকে। মালিকপক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ০৭ সেপ্টেম্বর বোনাস পরিশোধ করে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে। ফলে শ্রমিকরা গ্রামের বাড়িতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস বা ট্রেনের টিকেট কেটে ফেলেন। কিন্তু ০৭ সেপ্টেম্বর বোনাস না পেয়ে অগ্রিম কাটা টিকেটের টাকাতো গচ্চা দিয়েছেনই, উপরন্তু বোনাস পাওয়ার অনিশ্চয়তায় ভুগছেন শ্রমিকরা।

০৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বোনাস পাননি খিলগাঁওয়ের ফুজি স্টাইল ও মালিবাগের আল্লার দান কারখানার শ্রমিকরাও।

কোনো ঈদের আগেই সরকারের দেওয়া নির্দিষ্ট সময় অনুসারে মালিকপক্ষ বোনাস দেন না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এর আগে কখনোই সরকারের বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বোনাস দেননি মালিকরা, এবারও তাই হয়েছে। এটা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি) কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক ইস্যু সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ের সমস্যা সমাধানের দায়িত্বে নিয়োজিত বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবুর সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

তবে মঙ্গলবার (০৬  সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত শ্রম মন্ত্রণালয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বোনাস সংক্রান্ত কোনো জটিলতার খবর পাওয়া যায়নি বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

গত ০১ সেপ্টেম্বর কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরে (ডিআইএফই) ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কোর কমিটির ৩২তম সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, ০৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গার্মেন্টস কারখানা ও সকল প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের বোনাস দিতে হবে। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। উপস্থিত ছিলেন শ্রমসচিব মিকাইল শিপার, ডিআইএফই’র মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহম্মদ, শ্রম পরিচালক এ এস এম আশরাফুজ্জামান, শিল্প পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজি) আবদুস সালাম, বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএ’র পরিচালক মোস্তফা জামাল পাশা, শ্রমিকনেতা শুক্কুর মাহমুদ ও সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৬
ইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।