ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৯ ব্যাংককে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করার নির্দেশ গভর্নরের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৬
৯ ব্যাংককে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করার নির্দেশ গভর্নরের ফাইল ফটো

চর্তুথ প্রজন্মের নয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ব্যাংকিং কার্যক্রমে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে এবং আগ্রাসী ব্যাংকিং থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। 

ঢাকা: চর্তুথ প্রজন্মের নয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ব্যাংকিং কার্যক্রমে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে এবং আগ্রাসী ব্যাংকিং থেকে বিরত থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

 
 
সোমবার (২১ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্মেলন কক্ষে নতুন ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এক পর্যালোচনামূলক বৈঠকে এ নির্দেশ ও পরামর্শ দেন গভর্নর।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে সব ব্যাংকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ ও  রয়ে-সয়ে নিয়ম মেনে সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। ঋণ বিতরণ যেন এককেন্দ্রিক না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ বিতরণে বারণ করা হয়েছে।  

সর্বোপরি ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণভাবে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার তাগিদও দিয়েছেন গর্ভনর।  
 
গভর্নরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান, নির্বাহী পরিচালক ড. নির্মল চন্দ্র ভক্ত, মহাব্যবস্থাপক এস এম রবিউল হাসান ও নয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।  
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, আগ্রাসী ব্যাংকিং পরিহার, খেলাপি ঋণ কমাতে এবং ৪-৫টি ব্যাংককে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  
 
ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, গত ২৩ জুলাই স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ২০ জন পরিচালক থাকলে তিন জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও ১২ জন পরিচালক থাকলে ২ জন স্বতন্ত্র পরিচালক থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে বিষয়টিও মনে করিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  
 
নতুন ব্যাংকের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে নুরুল আমিন বলেন, ৩০ শতাংশ কৃষি ঋণ সরাসরি বিতরণ ও করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) খাতে ১০ শতাংশ অর্থ ব্যয় নতুন ব্যাংকগুলোর জন্য কঠিন হয়ে গেছে। এটা কমাতে বলেছি। একটি শাখা শহরে খুলে একটি গ্রামে খোলার পরিবর্তে দু’টি শাখা শহরে খুলে একটি শাখা গ্রামে খোলার প্রস্তাব করেছি।     
 
জানা গেছে, নানা পরিকল্পনা নিয়ে বছর তিনেক আগে কার্যক্রম শুরু করে নতুন ৯ ব্যাংক। তবে লক্ষণীয় অগ্রগতি হয়নি কোনো ব্যাংকের। বরং খেলাপি ঋণ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। একইসঙ্গে ব্যয় বেড়েছে ব্যাংকগুলোর। সেপ্টেম্বরে এসব ব্যাংকের ৫৫৮ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।  
 
এক বছর আগে খেলাপি ঋণ ছিল ১৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি ব্যাংকগুলোর। অল্প সময়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে এদের কেউ কেউ। সার্বিক বিষয়ে আলোচনা ও দিকনির্দেশনা দিতে ব্যাংকগুলোর এমডিদের নিয়ে বৈঠকটি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে নতুন ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৫৫৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ হওয়া ঋণের দুই দশমিক ২২ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে ১৬ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ছিল ১৬৪ কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের এক দশমিক শূন্য দুই শতাংশ।  
 
এতে এক বছরে ব্যাংকগুলোর ঋণ বেড়েছে নয় হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা ৫৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৯৫ কোটি টাকা, যা প্রায় সাড়ে তিনগুণ। বর্তমানের এ খেলাপি ঋণ আগের প্রান্তিক তথা গত জুনের তুলনায়ও অনেক বেশি। জুনে নতুন ব্যাংকগুলোর ২৩ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ৩৯২ কোটি টাকা খেলাপি ছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৬
এসই/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।