ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাগড়া!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাগড়া! তামাক ফসলের মূল্য নির্ধারণী সভার কার্য বিবরনী। ছবি: সংগৃহীত।

ঢাকা: ২০৪০ সাল নাগাদ তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে তামাকের চাষ নিয়ন্ত্রণে একটি খসড়া নীতিমালাও প্রণয়ন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।যার অন্যতম বাস্তবায়নকারী সংস্থা কৃষি মন্ত্রণালয়।কিন্তু খোদ কৃষি মন্ত্রণালয়ই তামাকের উপর বিদ্যমান ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক হ্রাসের পক্ষে একটি প্রস্তাবনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১৬ সালের ১৩ মার্চ কৃষিসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কৃষি মূল্য উপদেষ্টা কমিটির ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে তামাক ফসলের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণী সভায় তামাক কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের অনুরোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ সভায় তামাকের সর্বনিম্ন দর নির্ধারণ বিষয়ে আলোচনার কথা থাকলেও তামাক রপ্তানি বৃদ্ধির উপায়, তামাকের উৎপাদন, তামাক চাষিদের প্রশিক্ষণ, তামাক ব্যবসায় নিয়োজিত কোম্পানির সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য উপায় নিয়েও আলোচনা হয়।



সভায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, ঢাকা টোব্যাকোসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তামাকবিরোধীদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিপরীতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্ত অনভিপ্রেত। এর ফলে দেশে তামাকের আবাদ বৃদ্ধি পাবে, বাড়বে খাদ্য নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি, বিপন্ন হবে পরিবেশ ও প্রতিবেশ।

২০১০-১১ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি জমিতে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে তামাক রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করা হয়। ২০১১-১২ অর্থবছরে কৃষি মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে রপ্তানি শুল্ক কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। পরবর্তীতে ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে এই শুল্কহার আবার ১০ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া উক্ত সভায় তামাকের সর্বনিম্ন মূল্য তালিকা সম্বলিত ২০ হাজার লিফলেট কোম্পানিগুলোর আর্থিক সহায়তায় চাষি পর্যায়ে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রংপুর অঞ্চলে তামাক কেনাবেচা হয় এমন ২০টি খোলা বাজারে মূল্য তালিকা সম্বলিত ৪০টি ফেস্টুন রংপুর তামাক ব্যবসায়ী সমিতির নিজস্ব অর্থে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়।
প্রকৃতপক্ষে, এসব কর্মকাণ্ডের ফলে চাষিরা তামাক চাষে আরও উৎসাহিত হবে।

‘বাংলাদেশে তামাক চাষের প্রভাব’ শীর্ষক একটি গবেষণা সমাপ্ত হয়েছে মর্মে সভার কার্যবিবরণীতে জানা গেছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি রিভিউ করে কমপ্লায়েন্স গাইডলাইন প্রণয়নের জন্য গঠিত সাব-কমিটি ৩ মাসের মধ্যে মতামত দেবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভা থেকে তামাক চাষে জমি সম্প্রসারণ ব্যাতিরেকে উন্নত চাষ পদ্ধতি এবং উফসি জাত প্রবর্তনের মাধ্যমে তামাক উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তামাক চাষের পক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নমনীয়তাই প্রতীয়মান হয়। তামাকচাষে এধরনের সুবিধা ও প্রণোদনা প্রদান অব্যাহত থাকলে তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। সূত্র: টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রি ওয়াচ বিডি @ প্রজ্ঞা’র প্রেস রিলিজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৬
জেডএম/

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।