ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মাতারবাড়ি প্রকল্পের টাকা ফেরত গেলেও বরাদ্দ বাড়ছে ৬৭৪ কোটি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
মাতারবাড়ি প্রকল্পের টাকা ফেরত গেলেও বরাদ্দ বাড়ছে ৬৭৪ কোটি

ঢাকা: বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ‘মাতারবাড়ি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ’ চলতি বছর প্রকল্পের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট বরাদ্দ ছিলো ২ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা। 

সময় মতো জাপানি পরামর্শক না আসা ও সংশ্লিষ্টদের বাস্তবায়ন অদক্ষতার কারণে মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বাকি ২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা এডিপি থেকে ফেরত যাচ্ছে।

বড় অংকের টাকা এডিপি থেকে টাকা ফেরত গেলেও আরএডিপিতে বিদ্যুৎ বিভাগে বাড়ছে ৬৭৪ কোটি টাকা।  

গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় সাত জাপানি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় সঠিক সময়ে জাপানি পরামর্শক আসতে বিলম্ব হয়। ফলে এডিপির টাকা খরচও করা যায়নি যথা সময়ে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বিদ্যুৎ খাতে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যয়বহুল প্রকল্প। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিদেশি অর্থায়নে (জাইকা) ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি, সরকারি খাত থেকে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ৬৬ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ১১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা মেটানো হবে।

মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১২০০ মেগাওয়াট। ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পূর্ণ দুটি ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। ২০২৩ সালের জুন থেকে এই প্রকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চলতি অর্থবছরে ২ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিলো। কিন্তু এডিপিতে টাকা খরচ করা যায়নি।  

তবে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি বছরে এডিপির টাকা খরচ না হলেও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই টাকা খরচ করা যাবে।  

এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, চলতি অর্থবছরে এডিপিতে ২ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিলো। কিন্তু জাপানি পরামর্শক প্রকল্প এলাকায় আসতে বিলম্ব হওয়ার কারণে এডিপির টাকা সব খরচ করা যায়নি। মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছি। বাকি টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে। তবে প্রকল্পের মোট ব্যয় অনেক। আশা করা যাচ্ছে সামনের অর্থবছরে এই টাকা খরচ করা যাবে। তাছাড়া বর্তমানে প্রকল্পের কাজের গতিও ভালো। ’

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এডিপিতে মোট বরাদ্দ ছিলো ১৬ হাজার ৬৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের মোট সংখ্যা ৬৯টি। এর মধ্যে বিনিয়োগ ৬০টি এবং কারিগরি কর্মসূচির ৯টি প্রকল্প।  

তবে মাতারবাড়ি প্রকল্পে বড় অংকের টাকা ফেরত দেয়া হলেও সংশোধিত আরএডিপিতে ১৬ হাজার ৭৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ফলে এডিপিতে মাতারবাড়ি প্রকল্পে বরাদ্দ কমলেও বিদ্যুৎ বিভাগে আরডিপিতে অতিরিক্ত ৬৭৪ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আরএডিপি’র জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবমতে প্রথম কল নোটিশ অর্থমন্ত্রণালয়য়ে সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।  

চলতি মাসের শেষের দিকেই চূড়ান্ত হতে যাচ্ছে আরএডিপি। নগরীরর শেরে বাংলানগরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সম্পর্ক বিভাগে(ইআরডি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ সভায় চূড়ান্ত আরএডিপি অনুমোদন দেবে সরকার।

চূড়ান্ত আরএডিপি ও জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে পোর্ট ফোলিও মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।  

জাইকার অর্থায়নে বাংলাদেশে চলমান ৩৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন অগ্রগতি ভালো রাখার বিষয়টি উঠে আসে সভায়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব(আমেরিকা ও জাপান উইং প্রধান) শহিদুল ইসলাম। ইআরডি, জাইকা প্রতিনিধি ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টসহ শতাধিক প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভা প্রসঙ্গে শহিদুল ইসলাম বাংলানউজকে বলেন, জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়িত ৩৪টি প্রকল্প নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পগুলোর বর্তমান অবস্থা ও বাস্তবায়নের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে আরএডিপি চূড়ান্ত করা হবে সেই বিষয়টিও উঠে আসে সভায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৭
এমআইএস/পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।