ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

টিসিবি’র প্যাকেজে পণ্য বিক্রিতে বাক-বিতণ্ডা

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
টিসিবি’র প্যাকেজে পণ্য বিক্রিতে বাক-বিতণ্ডা প্যাকেজ ছাড়া পণ্য কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: প্যাকেজ ছাড়া পণ্য বিক্রি করছে না ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রতিষ্ঠানটি খোলা বাজারে বা ট্রাকসেলে এখন ৫ লিটার সয়াবিন তেলের সঙ্গে ২ কেজি করে ডাল অথবা ছোলা এবং চিনির সঙ্গে ডাল অথবা ছোলার প্যাকেজ তৈরি করে বিক্রি করছে।

ফলে শুধু তেল বা চিনি নিতে আসা ক্রেতারা পণ্য কিনতে পারছেন না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে একটি বা দু’টি পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরছেন তারা।

এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা তর্ক-বিতর্ক ও হই-চইও হচ্ছে বিভিন্ন ট্রাকসেলের সামনে।

রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরেরপুল, দৈনিক বাংলা ও জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকার টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় কর্মীরা বলছেন, ভুয়া ক্রেতা ঠেকাতে আন-অফিসিয়ালি এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পবিত্র রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ১৫ মে থেকে সয়াবিন তেল, খেঁজুর, ডাল, চিনি ও ছোলা বিক্রি করছে টিসিবি। কিন্তু এর ১৫-২০ দিন পর থেকে প্যাকেজ সিস্টেম শুরু করেছেন ট্রাক সেলাররা। ফলে ৪২০ টাকা দিয়ে ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে আসা ক্রেতাকে অতিরিক্ত ১৬০ টাকার ২ কেজি মসুর ডাল অথবা ১৪০ টাকার ২ কেজি ছোলা নিতে হচ্ছে।

ঠিক তেমনি বাজার মূল্যের চেয়ে ১৮ টাকা সাশ্রয়ে চিনি কিনতে আসা গ্রাহককে অতিরিক্ত ৮০ টাকা কেজির ডাল ও ৭০ টাকা কেজির ছোলা কিনতে হচ্ছে। ফলে ১৮ টাকা বাঁচাতে ৭০-৮০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। তবে ডাল, কিংবা ছোলার ক্ষেত্রে কোনো প্যাকেজ নেই।

প্রেসক্লাব ও সচিবালয়ের সামনের ট্রাকসেলের টিসিবি’র তদারকি কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘রমজানের প্রথম দিকে খেজুর, ছোলা ও ডালের চাহিদা বেশি ছিলো। কিন্তু টিসিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার বলার পরও চাহিদা অনুসারে পণ্য দেননি। ফলে সেগুলো জমে আছে। এখন এ পণ্যগুলোই বেশি করে দেওয়া হচ্ছে’।

‘আর এখন চাহিদা চিনি ও তেলের। কিন্তু তাও প্রয়োজন মতো দিচ্ছেন না কর্মকর্তারা। ফলে ডিলাররা এ পণ্যগুলো বিক্রি করতে প্যাকেজ সিস্টেম করেছেন’।

তবে বিক্রেতারা বলেন, ভুয়া ক্রেতাদের ঠেকাতেই আন-অফিসিয়াল এ উদ্যোগ। কিছু ক্রেতা প্রতিদিনই চিনি ও তেল নিচ্ছেন। একটি পরিবারে দিনে ২ কেজি করে চিনি আর ৫ লিটার করে তেলের দরকার হয় কি? ওই অসাধু ব্যক্তিরা এ সুযোগে পণ্য মজুদ করছেন। তারা যেন এ অনৈতিক সুবিধা না নিতে পারেন, সে লক্ষ্যেই এ প্যাকেজ।

মতিঝিলের জীবন বিমা করপোরেশনের সামনে ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি করছেন ডিলার বাদশা। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু ক্রেতা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন। পাশেই কয়েকজন বিক্রেতাদের সঙ্গে তর্ক ও হই-চই করছেন।

সেখানকার ক্রেতা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেনের অভিযোগ, ‘১৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল পাওয়ার পর এখন তারা বলছেন, চিনি কিনলে সঙ্গে ছোলা অথবা ডাল কিনতে হবে। এ কেমন বিচার? আমার দরকার চিনির, এসব কিনবো কেন?’
একই অভিযোগ করেন আনোয়ার, সালাম ও রিপনসহ বেশ কিছু সাধারণ মানুষ।

টিসিবি’র কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, ‘অফিসিয়ালি আমরা প্যাকেজ সিস্টেমের অনুমতি দেইনি। তবে ভুয়া ক্রেতা ও দালাল চক্র থেকে পণ্য রক্ষায় কোথাও কোথাও এ সিস্টেম চালু হয়েছে’।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৭
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।