ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অকেজো ৫০ কোটি রুপি বদলে সাড়া নেই ভারতের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
অকেজো ৫০ কোটি রুপি বদলে সাড়া নেই ভারতের প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশ সরকারের কাছে থাকা ৫০ কোটি ১১ লাখ অকেজো রুপি বদলের আবেদন করার সাতমাস পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া দেয়নি প্রতিবেশী সরকার। দেশে রুপি সংরক্ষণের বৈধতা না থাকায় কোনো পদক্ষেপও নিতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে অকেজোই থাকছে সরকারের এই বিপুল অংকের অর্থ।

দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি) ও কাস্টমস বিভিন্ন সময় বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে এসব রুপি জব্দ করেছে। রুপির বিষয়ে আদালতে চলছে ফৌজদারি মামলাও।


 
২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের ঘোষণা দেন। দেশটিতে ওই দিন মধ্যরাত থেকে এসব নোট বাতিলের আদেশ কার্যকর হয়েছে।
 
ভারত সরকারের এমন সিদ্ধান্তে অকেজো হয়ে যায় বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব সংরক্ষণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা ৫০ কোটি রুপিও। অকেজো হয় সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ৫ লাখ ৩৪ হাজারসহ সরকারি চার ব্যাংকের মোট ১১ লাখ রুপি।  

রুপি বাতিলের পর ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. উর্জিত প্যাটেলকে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠি পাঠানোর সাতমাস পেরিয়ে গেলেও কোনো সাড়া মেলেনি রুপি বদল করে দেওয়ার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের কলকাতা শাখার মাধ্যমে এসব রুপি বদলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তারা কোনো সাড়া দেননি।
 
এদিকে, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মাসুদ বিশ্বাস বাংলাদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সরকারের পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট রূপান্তরে সহযোগিতা চেয়ে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে চিঠি পাঠালে সেদিক থেকেও কোনো উত্তর মেলেনি।

উর্জিত প্যাটেলকে দেওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক সোনালী ব্যাংক সীমান্ত হাটে বৈধ লেনদেন করে ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ ভারতীয় রুপি জমা করেছে। কাস্টমস, সীমান্ত ও বিমানবন্দর থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কর্তৃক বিভিন্ন সময় জব্দ করা ৫০ কোটির অধিক রুপি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রয়েছে।
  
ভারত সরকার তার ৫০০ ও ১০০০  রুপির নোট বাতিল করার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সরকারের রাজস্ব সংরক্ষণের স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা ভারতীয় এসব রুপির পরিবর্তে বাংলাদেশি টাকা অথবা ডলারে রুপান্তর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।
 
শুভঙ্কর সাহা বলেন, ৫০ কোটি রুপিই ভারত থেকে বৈধভাবে আনা হয়নি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন সময় আটক করেছে। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারছি না। এসব রুপি বদলের জন্য আরও কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।
 
সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন,  এ বিষয়ে আমাদের কলকাতা শাখার মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি, তাতে সাড়া মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আর কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।
   
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এসই/এসএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।