ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বৃষ্টির অযুহাতে খুলনায় সবজির বাজারে আগুন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
বৃষ্টির অযুহাতে খুলনায় সবজির বাজারে আগুন খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার। ছবি: মানজারুল ইসলাম

খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার থেকে:  বৃষ্টির কারণে বিক্রেতারা প্রতিটি শাক সবজির দাম বাড়িয়েছেন। দাম বাড়াতে তাদের একটা না একটা অযুহাত আছেই। আমরা তো তাদের কাছে অসহায়। আমাদের খেতে হবে। আর খেতে হলে দাম যতই হোক না কেন কিনতে হবে।

অনেকটা তিক্ততা নিয়ে শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে খুলনা মহানগরীর গল্লামারী কাঁচাবাজারে এসব কথা বলেন সেলিম নামের এক ক্রেতা।

তার মতে, খুলনাঞ্চলে বৃষ্টি হলেও বন্যা বা জলাবদ্ধতা হয়নি।

যার কারণে সবজির দাম এত বেশি বাড়তে পারে!

তার সাথে একই সুরে সবজির দাম বাড়ায় ক্ষোভ আর আক্ষেপ প্রকাশ করে আল- আমিন বলেন,  বৃষ্টির মৌসুমে তো বৃষ্টি থাকবেই। বৃষ্টিকে অযুহাত হিসেবে দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দাম বাড়ায় ক্রমেই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে অধিকাংশ সবজি। ধরে নিলাম শাক সবজি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে তাই দাম বেড়েছে। কিন্তু পেঁয়াজ তো ক্ষেতে নেই, তাহলে তার দাম বড়লো কেন বলে প্রশ্ন ছোঁড়েন তিনি।
খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার।  ছবি: মানজারুল ইসলাম সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত শুক্রবারের তুলনায় আজ শুক্রবার বাজারে প্রায় সব সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।   পটল ৩০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর মুখী ২৪ থেকে ৩০ টাকা,  ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৮০ টাকা, কাকরোল ৪০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২২ টাকা, পেঁপে  ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কুশী ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লাউ কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচকলা ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শসা ৪০ টাকা, জিঙ্গা ৬০ টাকা, টমোটো ৫০, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, শিম ১০০ টাকা, ওল ৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । শাকের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

বাজারে সবজি দাম বাড়ার জন্য অব্যাহত বৃষ্টিপাতকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদন পর্যায়ের কৃষকরা মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে সবজি ও কাঁচা মরিচে।
খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার।  ছবি: মানজারুল ইসলাম খুচরা সবজি বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সারাদেশে বন্যার কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার কারণে অন্যান্য জেলা থেকে খুলনায়  সবজির সরবরাহ কমেছে। তাই সবজির দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেড়েছে।

তিনি জানান, গল্লামারী বাজারের শাক সবজি অন্যান্য বাজারের তুলনায় টাটকা। এগুলো খুলনার ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও যশোর থেকে আসে। টাটকা সবজি হওয়ার কারণে দাম একটু বেশি।

তার কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিক্রেতা  মহি উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, টাটকা শাক-সবজি খাতি গেলি গল্লামারী আসতি হবে। এবার যে বৃষ্টি অইছে সবজি বাজারে পাওয়া যাইতেছে, এইডা শুকর করেন। কৃষকগো ক্ষেত-খামার তলাইয়া গেছে,  দাম তো বাড়বোই। আমাগে পাইকারীতে বেশি দামে কিনতি অইছে। তাই খুচরা বেশি দামে বেচি।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে বিক্রেতা রহিমা বলেন, শুনেছি ইন্ডিয়া থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ। যে কারণে পাইকারি বাজার থেকে আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

এদিকে সবজির দাম বাড়লেও মাছের বাজারে কিছুটা স্বস্তি। মাছ বিক্রেতা আবু মুসা জানান, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমায় অন্যান্য মাছের চাহিদা কমে গেছে। এতে দামও কমে গেছে। তিনি জানান, ইলিশের কেজি ৪০০ থেকে ৭০০টাকা। যে কারণে অনেকেই অন্য মাছ না কিনে ইলিশের স্বাদ নিচ্ছেন।
খুলনার গল্লামারী কাঁচাবাজার।  ছবি: মানজারুল ইসলাম মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২০০-২২৫ টাকা, কাতলা ২৫০-৩২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০-২০০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২০০ টাকা, টেংরা ৪০০-৫০০ টাকা, প্রকার ভেদে গলদা চিংড়ি ৬০০-১০০০ টাকা, বাগদা ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
 
বাংলাদেশ সময়:  ২-৩৫ ঘণ্টা,  আগস্ট ১১, ২০১৭
এমআরএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।