ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ-ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ: মাত্র এক সপ্তাহ আগেও চাষের পাবদা বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা কেজিতে। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৩০ টাকায়। এক লাফে কেজিতে দাম বেড়েছে ৯০ টাকা।

খুচরা বাজারের এমন চিত্রের বিপরীতে পাইকারি বাজারও যেন থেমে নেই। একই মাছ পাইকারি বাজারে ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গালভরা হাসিতে মাছের বাজারের দামের এমন উত্তাপের তথ্য দিলেন নগরীর মেছুয়া বাজারের পাইকারি আড়তের আড়তদার আল মামুন।

তার পাশেই দাঁড়িয়ে সোহেল নামের আরেক আড়তদার আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের কাতলের দাম হাঁকাচ্ছিলেন ৩২০ টাকা কেজি। তখন শুক্রবার (১১ আগষ্ট)। ঘড়ির কাঁটায় সকাল সাড়ে ৭টা। ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ-ছবি: অনিক খানখুব ভোরেই যারা বাজারে আসেন তারা সাধারণত এ পাইকারি মাছ মহাল থেকেই মাছ কিনেন। খুচরা বাজার থেকে মাছ কিনলে প্রতি মাছে কেজিতে গড়পরতা ৭০ থেকে ১’শ টাকা বেশি খরচ করতে হয়।

এ কারণেই সাত সকালেই এখানকার আড়তে চলে এসেছেন নগরীর ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মারুফ হোসেন মুন্না।

তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করেন। মাছের বাজারের উত্তাপে ক্ষোভ ঝেরে বললেন, বাজারে মাছের উত্তাপে তো টেকাই দায়! ব্যবসায়ীদেরও অযুহাতের শেষ নেই। ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ-ছবি: অনিক খাননিজেদের খেয়াল খুশিমতো একেক দিন একেক রকম দাম নেওয়া হয়। শুক্রবার হওয়ায় মাছের দামের আগুন মনে হয় ফায়ার ব্রিগেড এনে নেভাতে হবে!

সবচেয়ে বড় এ পাইকারি বাজারের মাছের আড়তে অন্য মাছের দামও বেশ চড়াই মনে হলো। মাছ বেপারি পুলক দাস (৪৫) এক কেজি ওজনের মাঝারি আকারের জোড়া ইলিশের দাম চাইছিলেন ১ হাজার ৩’শ টাকা। তবে শেষমেষ ১০০ টাকা কমে বিক্রিতে রাজি হলেন তিনি।

তিনি জানান, বাজারে বড় ইলিশ মিলছে না অনেক দিন ধরেই। তবে ক্রেতার সাধ্যের মধ্যেই এ দামে মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি চলছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এ বাজারে এদিন দেশি মাছের সরবরাহ অনেক কমই মনে হয়েছে। এক কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের চাষের রুই মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দুই কেজি ওজেনর পাঙ্গাস ৯০ থেকে ১’শ টাকা কেজি, দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের সিলভার ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বড় আকারের সরপুঁটি ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

দেশি কাতল ও রুই’র মতো বাজারে মিলছে মায়ানমার থেকে আসা মাছও। মায়ানমারের ৫ কেজি ওজনের কাতলের দাম কেজি প্রতি ৩৮০ টাকা। আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের রুই মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাঙ্গাস মাছের দাম স্থিতিশীল থাকলেও অন্য মাছের দাম ঘোড়ার রেইসের মতোই বেড়ে চলেছে। আর এর কারণ জানিয়ে একাধিক মাছ বিক্রেতা বলেন, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় ঢাকায় মাছের বাজারের বড় রকমের যোগান দিচ্ছে ময়মনসিংহের মাছ। ময়মনসিংহেও মাছের বাজারে উত্তাপ-ছবি: অনিক খানআর এ কারনে এখানে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে প্রতিনিয়তই, জানান খুচরা মাছ ব্যবসায়ী গোপাল।

এদিকে, এ বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫’শ টাকা, খাসি ৭০০ টাকা, দেশি মুরগি ৩৬০ থেকে ৪’শ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকা, কক (সাদা) ২০০ টাকা আর কক (সোনালি) ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

তবে বেশিরভাগ দোকানেই নিত্য দিনের মূল্য তালিকা লেখা হয় না। এ কারণে একেকজনের কাছ থেকে সুকৌশলে একেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মাংস কিনতে আসা অনেকেই।

এ বাজারের মাংস বিক্রেতা শামসুদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, রোজার পর থেকেই মাংসের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। ঈদের সময় এ দাম আরো কমে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘন্টা, আগষ্ট ১১, ২০১৭
এমএএএম/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।