ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কর্মব্যস্ততা থাকলেও বিক্রি নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
কর্মব্যস্ততা থাকলেও বিক্রি নেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিক্রি নেই কামারপাড়ায়-ছবি-বাংলানিউজ

বরিশাল: আসন্ন ঈদুল আজহায় পশু কোরবানিকে ঘিরে ব্যস্ত বরিশালের কামারপাড়ার কারিগররা। পাশাপাশি হোগলা-সাজি ও খাটিয়া (গাছের গুড়ি) ব্যবসায়ীদেরও রয়েছে আলাদা তোরজোড়। কিন্তু ক্রেতা সংকটে ভুগছেন এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, প্রতিবছরই কমে আসছে এসব পণ্যের ক্রেতার সংখ্যা। কারণ হিসেবে দিনে দিনে পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও বিকল্প সৃষ্টি হওয়াকে দায়ী করেছেন তারা।

বরিশাল নগরের হাটখোলার সর্ববৃহৎ কামারপট্টি ঘুরে দেখা গেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকেও কোনো ক্রেতার দেখা মিলছে না। তবে পুরাতন দা-বটিতে ধার দেওয়ার জন্য আসছেন অনেকেই।

আর এই ধার দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার কারিগররা।

শিবু কর্মকার নামে এক কারিগর বলেন, দিনে দিনে লোহা ও কয়লার দাম বেড়েই চলেছে। তাই চাপাতি, দা-বটি, ছুরির দামও বেড়েছে। আগে মানুষ প্রতিবছর কোরবানীর সময় এসব পণ্য নতুন কিনতেন। সেখানে এখন এগুলোর দাম বেড়ে যাওয়ায় পুরাতন চাপাতি দা-বটিতে, ধার দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে খরচ হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকার মতো।

তিনি বলেন, এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে। হাটখোলায় আগে যেখানে ১০ জন ছিলাম এখন সেখানে ৫ জন টিকে আছি।

বিক্রি নেই কামারপাড়ায়-ছবি-বাংলানিউজ

লক্ষণ কর্মকার নামে অপর একজন জানান, আগে নিজেরাই কোরবানির পশু জবাই ও কাটার কাজ করতেন। এখন এই কাজটি করেন কসাইরা। বর্তমানে দা/বটি কেজি প্রতি ৫’শ টাকা, চাপাতি সাড়ে ৪’শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছুরি পিস প্রতি ২’শ টাকা, চামড়া ছোলার ছুরি দেড়-তিনশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জবাই করাসহ অন্য ছুরি বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৫ টাকা দরে পিস প্রতি। কাঁচা লোহার পণ্যের দাম একটু কম।

হাটখোলার সাজি ও হোগলার দোকানগুলোতেও তেমন ক্রেতার দেখা মেলেনি। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন সাজির বদলে প্লাস্টিকের গামলা আর পাটির বদলে মোটা পলিথিন ব্যবহার করেন অনেকে। তাই পাটি-সাজির কদরও কম।  

বর্তমানে সাড়ে ৩-সাড়ে ৪ হাত পাটি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। সাড়ে ৪ হাত/সাড়ে ৫ হাত পাটি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়। সাজি আকারভেদে ১২০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কোরবানীর ১/২ দিন আগে পাটির বাজারের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন হাটখোলার পাটি-সাজি ব্যবসায়ী মিঠুন।

বিক্রি হচ্ছে না খাটিয়া-ছবি-বাংলানিউজকোরবানি পশু জবাই ও এর মাংস কাটার কাজের অন্যতম অনুসঙ্গ খাটিয়া। গাছের গুড়ি কেটে তৈরি এসব খাটিয়ার বাজার সারাবছর জমজমাট না থাকলেও কোরবানীর সময় কদরটা বেড়ে যায়।

আবার খাটিয়া যেমন তেমন গাছের না হয়ে তেঁতুল গাছের হলে ভালো হয় বলে জানালেন কাঠপট্টির ব্যবসায়ীরা। বরিশাল নগরের নাজিরের পোল এলাকায় সবচেয়ে বেশি খাটিয়া বিক্রি ও আমদানি করা হয়। সেখানে প্রতি পিস খাটিয়া আকারভেদে দেড়শ থেকে ৭’শ টাকা দরে বিক্রি হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নাদিম জানান, তেঁতুল গাছের খাটিয়ার কদর বেশি থাকলেও এই গাছের আমদানি কম। তাই দামও দিনে দিনে বাড়ছে। বর্তমানে ক্রেতা না থাকলেও ঈদের ১/২ দিন আগে খাটিয়া বিক্রি হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এমএস/আরআর
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।