ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাইকারি বাজারে নিম্নমুখী চালের দর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৭
পাইকারি বাজারে নিম্নমুখী চালের দর চালের আড়ত; ছবি-জি এম মুজিবুর

ঢাকা: গত এক মাস ধরে দেশের চালের বাজারে অস্থিরতা। দাম বেড়ে হয়েছে আকাশচুম্বী। অসাধু মিল মালিকদের অবৈধ মুনাফার প্রবণতা এবং বাজারের লাগাম টানতে সরকার ব্যর্থতার কারণে নাজেহাল ক্রেতারা। 

তবে দেরিতে হলেও সরকারের ঘুম ভেঙেছে। চালের দাম কমাতে নানাভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

গত এক সপ্তাহে অবৈধভাবে চাল মজুতকারী কিছু চালকলে অভিযান চালানোর পাশাপাশি বেশ কিছু মিল মালিককে গ্রেফতার ও তাদের জরিমানাও করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

সরকারের এসব পদক্ষেপের সুফল দেখা যাচ্ছে পাইকারি বাজারে মিনিকেট, নাজিরশাইল, বিআর-২৮, স্বর্ণা ও পারিজা চালের কেজিপ্রতি দাম কমেছে ১-৩ টাকা করে।

তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে।  খুচরা বাজারে দাম কমতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও মিরপুর-১ নম্বরের চালের আড়তগুলো সরেজমিনে ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।        

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সর্বশেষ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। এছাড়া বিআর-২৮ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫৩ করে যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৬ টাকা করে।  পারিজা স্বর্ণা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৯ থেকে ৫০ টাকা করে।

পাইকারি বাজারে চালের দর কিছুটা নিম্নমুখীর বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি চাপে পড়ে মিল মালিকরা বাজারে এখন চাল ছাড়তে শুরু করেছে।  রশিদের মতো রাঘব বোয়াল মিল মালিকদের গুদামে অভিযানে কিছুটা আতঙ্কগ্রস্ত মজুতদাররা।  তাই এখন ভয়ে তারা চাল ছাড়তে শুরু করেছেন। এইভাবে চাল বাজারে আসতে থাকলে সপ্তাখানেকের মধ্যে বাজার স্থিতিশীলতার দিকে এগোবে।

তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে সরকার ও মিল মালিকরা তাদের অবস্থান কত দিন ধরে রাখে। এই দুই পক্ষের ওপর নির্ভর করবে আগামী দিনগুলোতে চালের বাজার।  দুই পক্ষের মধ্যে কোনো এক পক্ষ যদি নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে তাহলে আবার হু হু করে বাজারে দাম বৃদ্ধি পাবে।

মিরপুর-১ নম্বরের মেসার্স বেঙ্গল রাইস এজেন্সির কর্ণধার হাজী আবুল কাশেম দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, চালের দাম বাজারে এতো দিন কেন বাড়তি ছিল আমরা সবাই তা জানি। সরকারের চাপে মিল মালিকরা চাল বাজারে ছাড়তে শুরু করছে তাই দাম কমছে। দাম কমার আশাবাদ জানাচ্ছেন চালের পাইকারি ব্যবসায়ী আবুল কাশেম; ছবি- জিএম মুজিবুর  তিনি বলেন, চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারকে সামনের দিনগুলোতে এমন শক্ত অবস্থান নিয়ে চলতে হবে, না হলে বাজারে সঙ্কট দেখা দিবেই।

কারওয়ানবাজারের চালের পাইকারি ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দেশে বন্যা পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা ইস্যু ও ভুয়া খবর ছড়িয়ে মিল মালিকরা একচেটিয়া দাম বাড়িয়ে গেছেন। কিন্তু তাদের থামানোর কেউ ছিল না।  যখন মিডিয়ায় এ সব প্রচারিত হয় তখন সরকার নড়েচড়ে বসে এবং দাম কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়।

তিনি আরও বলেন, চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে, আমি মনে করি সরকারই সব থেকে বেশি দায়ী। কারণ সরকার নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে না। এর সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে দাম বাড়াতে পারে।

সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী মিনিকেট ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা, বিআর-২৮ ৬০ টাকা, স্বর্ণা ও পারিজা ৫২ থেকে ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  তবে পাইকারি বাজারে দাম কমার কারণে ২-৩ দিনের মধ্যে এই দামেও পরিবর্তন আসবে বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০,২০১৭
এমএসি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।