ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বার বার এমডি বদল করায় কার্যক্রম ব্যাহত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
বার বার এমডি বদল করায় কার্যক্রম ব্যাহত

ঢাকা: এক বছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩১ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেনকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আসছে নভেম্বরেই অবসরে যাবেন তিনি।

একই অবস্থা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরোশন অফ বাংলাদেশের (আইসিবি)। আগামী বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অবসরে যাবেন এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা।

আবারও পদোন্নতি দিয়ে অল্প কিছুদিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের কার্যক্রম নির্ভর করে প্রধান নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ওপর। আর এসব প্রতিষ্ঠানে বছরে তিন থেকে চারবার পরিবর্তন হচ্ছে প্রধান নির্বাহী। এর ফলে বাড়ছে না কোনো বিনিয়োগ, অস্বস্তিতে আছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বছরের পর বছর গুণতে হচ্ছে লোকসান।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ভেবে-চিন্তে এমডি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলেন মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবস্থা বর্তমানে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেক খারাপ। রাষ্ট্রায়ত্ত এই দুটি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য এমডি নিয়োগে সরকারকে আর একটু সর্তক অবস্থানে যাওয়া উচিত।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী, সোনালী, অগ্রণী, জনতা, বেসিক, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ হয়ে থাকে। আর অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয় পদোন্নতির মাধ্যমে। যে কারণে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের পদোন্নতি দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করার কিছুদিনের মধ্যেই তাদের অবসরের সময় ঘনিয়ে আসে। ফলে দ্রুতই খালি হয়ে যায় পদোন্নতি দিয়ে পদায়ন করা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ।

জানা গেছে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত চারবার পরিবর্তন হয়েছে ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সর্বশেষ দায়িত্ব পেয়েছেন মো. মুঈন উদ্দিন যিনি ওই প্রতিষ্ঠানেই শুরু করেছিলেন ব্যাংকিং ক্যারিয়ার। এই নির্বাহীরও মেয়াদ শেষ হবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ২০১৬ সালের আগষ্ট পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান। তার আগে ২০১৬ সালেই ব্যাংকটিতে ২ জন এমডি পরিবর্তন হয়েছে। সর্বশেষ দায়িত্বে আছেন আ. ন. ম মাশরুর হুদা সিরাজী। তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। এক বছরে ব্যাংকটির ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করলেও তার মেয়াদ আছে দুই মাস। চলতি বছরের নভেম্বরেই দায়িত্ব শেষ হচ্ছে তার।

আর ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরোশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) এক বছরে এমডি পরিবর্তন হয়েছে তিনবার। বর্তমানে দায়িত্বে আছেন কাজী সানাউল হক। তিনি সর্বশেষ অগ্রণী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে পদোন্নতি পেয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নিয়ে চলতি বছরের ১০ আগস্ট বদলি হয়ে এসেছেন আইসিবিতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক বাদে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এমডি পরিবর্তন এমনভাবে করছে তাতে কিছু লোক শুধু এমডির সিল গায়ে লাগাতে পারছেন। প্রতিষ্ঠানগুলি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। তাই সরকারের উচিত যেসব ব্যাংক খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে এসব ব্যাংকের আইন পরিবর্তন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ব্যবস্থা করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান বলেন, আইনগতভাবেই বাণিজ্যিক ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক এবং বিশেষায়িত ব্যাংকে পদোন্নতি দিয়ে এমডি নিয়োগ করা হয়। বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।