কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬৯৩ কোটি ৫৭ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গত অর্থবছরের একই সময়ে পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ৬১৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এক বছরে ডলারের দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রতি ডলার ৭৮ টাকা ৫০ পয়সায় কিনতো। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকটি ডলার কিনেছে ৮২ টাকা ৪০ পয়সায়। অর্থাৎ ১ ডলার বিক্রি করে ৪ টাকা আয় বেশি হয়েছে প্রবাসীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংক ভেদে ডলারের দাম আরও বেশি বেড়েছে। বৈধ পথে আয় বেশি হওয়ায় এবং হুন্ডি প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর হওয়ায় বাধ্য হয়ে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরে প্রথম ছয়মাসে দেশের রেমিটেন্স আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে যায়। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে রেমিটেন্স আয় বাড়তে থাকে। কিন্তু ওই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হুন্ডি এবং খোলা বাজারে ডলারের দাম বেশি থাকায় সেপ্টেম্বরে গত ৭ বছরের সবচেয়ে কম রেমিটেন্স আসে। সেপ্টেম্বরে রেমিটেন্স আসে মাত্র ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার।
রেমিটেন্স কম আসার কারণ অনুসন্ধান ও হুন্ডির বিষয়ে নিশ্চিত হতে সরেজমিনে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই তদন্তে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে হুন্ডিতে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়টি উঠে আসে। এরপর প্রতিমাসেই আগের অর্থবছরের একই মাসের তুলনায় রেমিটেন্স আয় বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে ১১৬ কোটি এবং নভেম্বরে ১২১ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ১১৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের একই মাসের তুলনায় রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে ২২ শতাংশ। ওই সময় রেমিটেন্স আসে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। হুন্ডি প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমার ফলে রেমিটেন্স বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে সরকারকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। কিছুদিন হুন্ডিতে অর্থ লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় বৈধ পথে রেমিটেন্স কমেছিল। সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আবারও বাড়বে রেমিটেন্স।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৭
এসই/এমজেএফ