২৩ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার (ডিআইটিএফ) সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শুভাশীষ বসুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন-বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী, এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিজয় ভট্টাচার্য প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, এবারের মেলা সব দিক থেকে সফল হয়েছে। সবার সামগ্রীক সহযোগিতায় সার্থক হয়েছে। মিলানের বিশ্ব বাণিজ্য মেলার থেকে আমাদেরটা ভাল লেগেছে। অনেক বেশি আকর্ষণীয়। অনেক টাকা এবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর লাভ হবে।
সারাবছর আন্তর্জাতিক মেলা করার জন্য পূর্বাচলে ৩০ একর জমির ওপর প্রস্তুতি নেওয়া হবে। ২০২০ সালের মধ্যে সেখানে সারাবছর মেলার আয়োজন করতে পারবো। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন মেলার আয়োজন হয়। আমরাও এমন মেলার আয়োজন করবো।
তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে মেলা তার প্রমাণ। মানুষ এখন শহর থেকে গ্রামে যেয়ে থাকতে চান। কারণ গ্রামের অর্থনীতি চমৎকার। বিশ্বের অনেক দেশ এটা অনুকরণ করতে পারে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো।
মন্ত্রী আরো বলেন, আজকে এ মেলা সার্থক কেন জানেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী একটি জোট এখন আর জ্বালাও পোড়াও করেনি।
তিনি বলেন, একটি জোট নির্বাচনের জন্য ছয়টি শর্ত দিয়েছে। কিন্তু এ শর্ত বাস্তবায়নযোগ্য নয়। কেননা, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।
বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। আর সব ক্ষমতা প্রয়োগ করবে নির্বাচন কমিশন। আমাদের মেয়াদ আছে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। তার আগে নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময় ঘোষণা করবে।
শুভাশীষ বসু বলেন, দেশে ও দেশের বাইরে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ডিআইটিএফ ব্যাপক ভূমিকা রাখে। এদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। । ফলে ডিআইএফে আসলে অনেক কিছুই জানা যায়।
তিনি বলেন, রপ্তানি বাড়াতে মেলা ছাড়া কার্যকর মাধ্যম নেই। আমরাও বিশ্বের বিভিন্ন মেলায় অংশ নেই। ২০২০ সালেও দুবাইতে ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে অংশ নেব। এর উদ্দেশ্যই হচ্ছে বাংলাদেশের পণ্যকে ছড়িয়ে দেওয়া। বাংলাদেশ এ বছরের মধ্যেই উন্নয়নশীল দেশে উপনীত হবে। তখন এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রি) সুবিধা উঠে যাবে। তখন নিজেদের পণ্য দিয়ে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে হবে।
সচিব বলেন, বাংলাদেশের অনেক পণ্য আছে। যা দেশের বাজারে নয় বিদেশের বাজারে ছাড়া হয়। শুধু পণ্য নয়, সেবা পণ্যের দিকে এবার আমাদের নজর দিতে হবে।
তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যে পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ হতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রেখে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের বড় ভূমিকা রয়েছে কাজ করার। আশাকরি সবার প্রয়াসে বাংলদেশ উন্নত দেশে আসীন হবে।
সফিউল ইসলাম বলেন, আমাদের পণ্য আন্তর্জাতিক মান অর্জনের দিকে যাচ্ছে। বাণিজ্যমেলায় ২০ মিলিয়ন ডলারের অর্ডার হয়েছে। বিদেশিদের আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে দেশ ফার্নিচার এবং ইলেক্ট্রনিক্সে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের সাথী হিসেবে আমরা সরকারের পাশে থাকতে চাই। কোনো গেজেট বা এলআরও জারি করে যেন ব্যাবসায়ীদের মনোবল ভেঙে দেওয়া না হয়।
গত ১ জানুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত ৩৫ দিনব্যাপী মেলায় ১৭টি দেশের ৪৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। অংশ নেয়া ৫৮৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩ ক্যাটাগরিতে মোট ৪৪টি স্টলকে সেরা হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়। সেরা স্টলের ট্রফি তুলে দেন তোফায়েল আহমেদ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তার সহধর্মিনীসহ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
ইইউডি/আরএ