তাই ওষুধ প্রস্তুতকারকদের জন্য কারখানার পরিবেশ, কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিসহ যাবতীয় বিষয়ের অত্যাধুনিক রূপ প্রদর্শনের মেলা চলছে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)। বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী দশম এশিয়া ফার্মা এক্সপো-২০১৮ চলবে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত।
শুক্রবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) আইসিসিবিতে ঘুরে দেখা যায়, উৎসুক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে কর্মরত ও ব্যবসায়ীদের ভিড়। তার প্রধান কারণ আধুনিক যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতি সম্বলিত এ প্রদর্শনী।
আইসিসিবির ৩ নম্বর হলে ‘নিও অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডে’র প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হচ্ছে উন্নতমানের ও তুলনামূলক স্বল্প খরচে পুরো ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির ডিজাইন ও ব্যবস্থাপনা। যেখানে নিশ্চিত করা হয়েছে বাইরের পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কহীন একটি কারখানার। চীনের টফলোন কোম্পানির তৈরি প্রযুক্তিতে এ রকম কারখানা এরইমধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে দেশের সব নামিদামি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে।
টফলোনের সেলস ম্যানেজার জনি ঝউ বাংলানিউজকে জানান, সব ধরনের ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব প্রযুক্তিই আমাদের আছে। আর আমরা সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছি রুম এনভায়রনমেন্টের দিকে। এ ক্লাস, বি ক্লাস ও সি ক্লাস রুম এনভায়রনমেন্ট হিটিং ভেনটিলেশন অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং (এইচভ্যাক)-এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর আমাদের এইচভ্যাক সিস্টেম অনেক বেশি ভালো ও তূলনামূলকভাবে খরচ কম।
তিনি আরও জানান, ওষুধ তৈরির কাঁচামাল অর্থাৎ অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) প্রস্তুতকরণের জন্য বিশেষ প্ল্যান্টও রয়েছে আমাদের। এখানেও রুম এনভায়রনমেন্ট অত্যন্ত জরুরি। আর বাংলাদেশের মার্কেট ভালো। আমরা এই দেশে কাজ করতে পেরে নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করি।
রুম ইনভায়রনমেন্ট তৈরি করার জন্য বাতাস নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও প্রয়োজন হয় ভালো দেয়ালের। ইট, রড-সিমেন্ট ও বালির তৈরি দেয়ালের চেয়ে বেশি ভালো কাজ করে সংকর ধাতুর তৈরি জীবাণু সুরক্ষা সংযোজিত দেয়াল। তা পাওয়া গেলো একই হলের ক্রেস্ট প্রজেক্ট অ্যান্ড প্রফেশনালসের প্যাভিলিয়নে।
কোম্পানিটির সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. রাজীব হোসাইন জানান, আমাদের দেয়াল, রুফ ও দরজা-জানালা রয়েছে। যা বানানো হয় এক ধরনের স্যান্ডুইচ প্লেটের মাধ্যমে। এ প্লেটের মাঝখানে ‘রক উলে’র মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া চূড়ান্তভাবে আটকানো হয়। এছাড়া বাইরের দুইপাশে পলিইউরিথেন, অ্যালুমিনিয়াম হানিকম্ব ও পেপার হানিকম্বের সংমিশ্রণে তৈরি প্লেট। সম্পূর্ণ প্লেটটি প্রায় দুই ইঞ্চি পুরু। এতোটা প্রোটেকশনের কারণে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না। এছাড়া বিল্ডিং দেয়ালের চেয়ে এর খরচ কম এবং নিশ্চয়তাও বেশি। দেয়ালও অনেক সময় জীবাণু সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এদিকে এই প্লেট জীবাণুমুক্ত রাখাটাও অনেক বেশি সহজ।
এছাড়া এই কোম্পানিটি জীবাণুমুক্ত পাইপের জন্য সুরক্ষাকারী ইনস্যুলেটরও সাপ্লাই দিচ্ছে। ইনস্যুলেটরটি বিভিন্ন ফাইবার ও অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
অন্যদিকে আইসিসিবির ৪ নম্বর হলে দেখা যায়, ইতালি থেকে আগত স্কিল গ্রুপের এইচভ্যাক মেশিন। অত্যাধুনিক এ মেশনটির মাধ্যমে রুম এনভায়রনমেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কোম্পানিটির সেলস ডিরেক্টর আলেসান্দো বেরটন বাংলানিউজকে জানান, এই মেশিনটির সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে তার স্থায়ীত্ব। বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ভালো ফার্মাসিউটিক্যালসে এই মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে অন্যান্য কোম্পানির মেশিনগুলো থেকে তূলনামূলকভাবে দাম বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৮
এমএএম/জেডএস