ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

টিএমএসএস’র ব্যাংক আবেদন ৭ বছর পর প্রত্যাখান!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
টিএমএসএস’র ব্যাংক আবেদন ৭ বছর পর প্রত্যাখান!

ঢাকা: ২০১১ সালে বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছিল ক্ষুদ্রঋণ ভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ‘ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস)’। সাত বছর পর ওই আবেদন প্রত্যাখান করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।  

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের এই মেয়াদে আর কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভবিষ্যতে যদি কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়, তখন টিএমএসএস সবার আগে পাবে।

টিএমএসএস’র একটি ক্ষুদ্রঋণ ভিত্তিক এনজিও।

১৯৮০ সালে অশোক ফেলো, প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম বগুড়ায় এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি একটি নারী ভিত্তিক বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। যা বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্দেশে কাজ করছে।
 
টিএমএসএস চেয়ারপারসন হোসনে আরা বেগম ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর ৩১ ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে ২০১১ সালে ‘টিএমএসএস ক্ষুদ্র পুঁজি ব্যাংক লিমিটেড’ নামে একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ওই আবেদনের বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর মতামত চেয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। অর্থমন্ত্রী তা প্রত্যাখান করে বাংলাদেশ ব্যাংককে লিখেছেন, ‘আমাদের এই মেয়াদে আর কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে না। এটি ভবিষ্যতের জন্য তালিকাভুক্ত করে রাখুন। ভবিষ্যতে যখন কোনো ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে। তখন এটি সবার আগে পাবে। ’
 
এদিকে সাতবছর পর টিএমএসএস এনজিওর আবেদন প্রত্যাখান করা হলেও ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলা ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক ও পুলিশ ব্যাংক নামে নতুন তিনটি ব্যাংকের লাইসেন্স দিতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর সারমর্ম বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়।

এর আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় ২০১২ সালে অনুমোদন দেওয়া হয় চতুর্থ প্রজন্মের ৯টি নতুন ব্যাংক। এরমধ্যে এনআরবি গ্লোবাল ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় উদ্যোক্তাদের মালিকানায় রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, দ্য ফারমার্স ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক।

এসব ব্যাংক ব্যবসা শুরুর চারবছর পার হলেও বিশেষ কোনো নতুনত্ব আনতে পারেনি। গতানুগতিক ধারায় চলছে কার্যক্রম। উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ আর আগ্রাসী ঋণ বিতরণ করছে। ফলে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা ধরনের অনিয়মেও জড়িয়ে পড়েছেন পরিচালক ও কর্মকর্তারা।
 
দেশে বর্তমানে ৫৭টি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব ব্যাংকের মধ্যে বেসরকারি খাতে ৪০টি ব্যাংক, বিদেশি ৯টি ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রয়েছে ৮টি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য একশ’র কাছাকাছি আবেদন জমা পড়েছে। এসব ব্যাংকের বিনিয়োগকারীরা লাইসেন্স পাওয়ার আশায় অপেক্ষাও করছেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অনেক মানুষই নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স চায়। কিন্তু সরকারের উচিত সব আবেদন প্রত্যাখান করা। এই মুহূর্তে আমাদের নতুন কোনো ব্যাংকের প্রয়োজন নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
এসই/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।