তাদের অভিযোগ, প্রতি সপ্তাহের শেষ দিকে এসে মাংসের দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। সামনে রমজানের দোহাই দিয়ে স্থায়ী করতে চাইছেন তারা।
তবে ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, মাঝে মাঝে সরবরাহ কমে যায়। চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় দামটাও একটু বেড়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার থাকে না।
বৃহস্পতিবার (০৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর-১০ নম্বর কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে নিত্যপণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা, প্রতিকেজি খাসির মাংস ৭৮০-৮০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৫০-১৬০ টাকা, সোনালি মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৬০-২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
গত এক থেকে দুই সপ্তাহ আগেও প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪৫০-৪৮০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার মুরগি ১৩০-১৪০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি প্রতি পিস সাইজ অনুযায়ী ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা এবং বিক্রেতারা।
এ মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে কারওয়ান বাজারের মাংস বিক্রেতা কালু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘খামারিরা বাজার চড়া করার জন্য মুরগি কম সরবরাহ করছেন। ফলে বাজারে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির মাংসের বাজার চড়া থাকলে তো অন্যসব মাংসের বাজার এমনিতেই বেড়ে যায়। ’
তবে মিরপুর-১০ নম্বর কাঁচাবাজারের মাংস বিক্রেতা ইকবাল বলেন, সামনে পহেলা বৈশাখ, শবে বরাত ও রমজান মাস আসতেছে। ওই সময় প্রতিবছরই মাংসের দাম বাড়তে শুরু করে। রমজান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা চলতেই থাকবে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাংসের বাজার চড়া থাকলেও সবজির দামে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে। খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, টমেটো ২৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, ধনিয়াপাতা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
আর গাজর ২৫ টাকা, আলু ২০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি। এছাড়া লাউ প্রতি পিস ২০ টাকা, প্রতি জোড়া বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২৫ টাকা, লাল শাক, পালং শাক ও ডাটা শাক ৩ আঁটি ২০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
অন্যদিকে চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি এখনও বিরাজমান রয়েছে। মাংসের বাজার দরের সঙ্গে চালের দামে ক্রেতাদের ঊর্ধ্বশ্বাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
সর্বশেষ খুচরা মূল্য অনুযায়ী, কেজিপ্রতি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৩ টাকা, ১ নম্বর মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, সাধারণ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা, বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা ও স্বর্ণা এবং পারিজাত ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সর্বশেষ খুচরামূল্য অনুযায়ী দেশি পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড় নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য কয়েকটি পণ্যের সর্বশেষ খুচরা বাজারের তথ্য অনুযায়ী, কেজিপ্রতি আমদানি করা রসুন ১০০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ টাকা ও আমদানি করা মসুর ডাল ৭০ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা ও আদা ৮০ কেজি করে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া মাছের দামও রয়েছে গত সপ্তাহের মতোই। প্রতিকেজি কাতল মাছ ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ টাকা, রুই ২৩০-২৮০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা ও চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
মিরপুর-১০ নম্বর কাঁচাবাজারে মকথা হয় বাজারে আসা ক্রেতা রুবেল হোসেনের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ, শবে বরাত ও রমজান মাস সামনে রেখে বিক্রেতারা সকল পণ্যের দাম আস্তে আস্তে বাড়ানো শুরু করেছেন। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম আগে থেকেই বেশি এখন নতুন করে বাড়ানো হলে আমরা চলবো কীভাবে?
তাই নিত্যপণ্যের দামের লাগাম টানতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
এমএসি/এমএ