মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে প্রাঙ্গণে মেলার দ্বিতীয় দিনে দেখা যায় দর্শনার্থীদের ভিড়। সাধ্যমত পণ্য ক্রয়ে ব্যস্ত দেখা যায় ক্রেতাদের।
থাইল্যান্ডের ৪৫টি এবং বাংলাদেশের ৩৩টি প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নিয়েছে। মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে ফল, খাদ্য, কোমল পানীয়, প্রসাধনী, স্বাস্থ্যসেবা, গার্মেন্টস ও ফ্যাশন সামগ্রী, ওষুধ, জুয়েলারি পণ্য, শিশুদের পণ্য, উপহার সামগ্রী, গৃহস্থালি ও আনুষঙ্গিক পণ্য।
এছাড়া বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলবে থাইল্যান্ডের নৃত্যশিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হোটেলটির বলরুমে সকাল থেকেই বড় স্ক্রিনে দেখানো হচ্ছে থাই চলচ্চিত্র ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফলের বিরাট সমাহার দেখা গেছে এ মেলায়। বাংলাদেশি নাজমুস অ্যান্ড কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে এসব ফল এ দেশে আমদানি করে যাচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির সেলস এক্সিকিউটিভ মো. আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রায় ১২ ধরনের থাই ফল আমদানি করে থাকি। এর মধ্যে থাই পেয়ারা, বিভিন্ন প্রজাতির থাই আম, র্যামবিউটান, লংগন, কিউয়ি, ড্রাগন ফল, বিভিন্ন ধরনের তরমুজ, থাই পেঁপে ও থাই লিচু (ভিন্ন প্রজাতির)। এর মধ্যে ড্রাগন ফল, পেঁপে, পাকা আম বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি দরে।
তবে দাম নিয়ে একাধিক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন। সেগুনবাগিচা থেকে আগত জিয়াউর রহমান বলেন, এসব ফল রাজধানীর বেশ কয়েকটা হোটেল ও সুপার শপে পাওয়া যায়। সেখান থেকে এখানে দাম অনেক বেশি। তবে ফ্রেশ ও ফরমালিন ছাড়া পাচ্ছি, এটা স্বস্তির বিষয়। আমি অনেক ফল নষ্ট হয়ে যেতে দেখেছি। ফরমালিন দেওয়া থাকলে তা হতো না।
ফল দিয়ে তৈরি জুসসহ বিভিন্ন খাবার আইটেমও বিক্রি হচ্ছে মেলার একাধিক স্টলে।
ফল ছাড়াও মেলায় উল্লেখযোগ্যহারে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন হারবাল বা ইউনানি ওষুধ সামগ্রী। বাংলাদেশে ব্যবসা চালু করতে এদের প্রায় প্রত্যেকটি স্টলে এজেন্ট ওয়ান্টেড নামের সাইনবোর্ড লক্ষ্য করা গেছে। কথা হয় টাকাব কোম্পানির সহকারী ওভারসিজ ম্যানেজার চানচাই পিমসায়েং ও গোল্ডেন কাপ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার নিরাচাদা লেলারাসামির সঙ্গে।
বাংলানিউজকে তারা বলেন, আমরা বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করতে চাই। এ জন্য আমাদের দেশীয় এজেন্ট দরকার। আমাদের ওষুধের মধ্যে বিভিন্ন রকমের ব্যথার ওষুধ মুখ্য। এছাড়া এদেশের গার্মেন্টস কর্মীদের মাথা ব্যথার প্রকোপ সম্পর্কে আমরা জেনেছি। তাদের জন্য আমাদের ওষুধ রয়েছে। একটি কসটেপের মতো কাগজে ওষুধ লাগানো থাকে। তা মাথার দু’পাশে ঘষলে দ্রুত মাথা ব্যথা চলে যায়। এছাড়া বিভিন্ন প্রকার মলমও রয়েছে যা থাই ওষুধি গাছ দিয়ে তৈরি।
এদিকে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের সমাহারও দেখা গেছে মেলায়। অত্যাধুনিক পানির ফিল্টার, বিভিন্ন রকম লাইট, ক্রোকারিজ পণ্য, ইলেক্ট্রিক সুইচসহ হরেক রকমের পণ্যও এ মেলায় স্থান পেয়েছে। যার সবই থাই প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
খনিজ পদার্থের দিক দিয়ে থাইল্যান্ড অনেক আগে থেকেই সমৃদ্ধ। আর খনিজ থেকে পাওয়া বিভিন্ন দামী ও আকর্ষণীয় পাথরের তৈরি অলঙ্কারেরও স্থান পেয়েছে মেলায়।
থাইল্যান্ডের আনাদা জুয়েলারি লিমিটেডের মালিক কাই বানলানিউজকে বলেন, আমাদের অলঙ্কারগুলো অনেক আকর্ষণীয় ও দাম তুলনামূলক কম। আমাদের সর্বোচ্চ দামি অলঙ্কারের দাম ৬ হাজার টাকা।
মেলায় আগত থাই ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের বিক্রি ভালো চলছে। এছাড়া ক্রেতারাও উৎসাহী তা উপস্থিত একাধিক ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। আগতদের সবাইকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
এমএএম/এমজেএফ