ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ অর্থনীতিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৮
বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ অর্থনীতিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সেমিনারে আলোচকরা, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বেসরকারি খাতে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ বৈদেশিক মুদ্রার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে, যা দেশের অর্থনীতিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গবেষণা প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘প্রাইভেট কমার্শিয়াল বোরোয়িং ফ্রম ফরেন সোর্সেস ইন বাংলাদেশ: অ্যান অ্যানাটমি’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালে চার’শ কোটি ডলার বেসরকারি খাতে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ ছিল।

২০১৭ সালে তা বেড়ে প্রায় সাড়ে ১১’শ কোটি ডলার। বিদেশি এ ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ শতাংশ। বেসরকারি খাতে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ বৈদেশিক মুদ্রার ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে, যা দেশের অর্থনীতিতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন-বিআইবিএমের পরিচালক (গবেষণা উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী। গবেষণা দলে আরো ছিলেন বিআইবিএমের অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, বিআইবিএমের সহাকারী অধ্যাপক রুহুল আমীন, অধ্যাপক অন্তরা জেরিন, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) উপসচিব মো. আরিফুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্টের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ পাল।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের ১১ ধরনের উদ্বিগ্নতা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ফরেন কারেন্সি রিস্ক, মোরাল হ্যাজার্ড, কস্ট অব বোরোয়িং, ফরেন কারেন্সি বোরোয়িং লোকাল বিজনেস অর্গানাইজেশন, লোন ইউটিলাইজেশন, পলিসি আনসার্টিইনিটি, পলিসি সাপোর্ট, ভেরিফিকেশন অব অ্যাপ্লিকেশন, বোরোয়িং ফ্রম অফ শোর ব্যাংকিং ইউনিট ও ঋণ অনুমোদনে দীর্ঘ সূত্রিতা।

এতে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রায় ২৪ শতাংশ বিদেশি ঋণ পোশাক খাতে। এরপর বিদ্যুতে ২১ শতাংশ, সুয়েটারে ১৬শতাংশ, ডায়িং ও নিট গার্মেন্টসে ১২শতাংশ, টেক্সটাইলে ১১শতাংশ, প্ল্যাস্টিকসে ৫শতাংশ, সেবায় ৩শতাংশ এবং ওষুধে ২শতাংশ।  

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিআইবিএমের মুজাফফর আহমেদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বিডার নির্বাহী কমিটির সদস্য নাভাস চন্দ্র মন্ডল, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব-উল-আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সেমিনারে আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, রফতানিকারকদের দাবির প্রেক্ষিতে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে প্রথম দিকে এ ঋণের কিছু অপব্যবহার হয়েছিল। এখন এ ধরণের ঘটনা ঘটে না। পুরো বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোরভাবে নজরদারি করছে।

অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বর্তমানে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণ যেন ভিন্ন খাতে ব্যবহার না হয় সেদিকে বিশেষ নজরদারি করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করলে তারল্য সংকট থাকবে না। তবে এজন্য সরকারি বন্ড মার্কেট ডেভেলপ করা জরুরি। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নিলে ব্যাংকিং খাতে কোনো তারল্য সংকট থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৮
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।