এবছর রমজানে দেশি গরুর মাংস প্রতিকেজি ৪৫০ টাকা, বিদেশি বোল্ডার গরুর মাংস ৪২০ টাকা, মহিষের মাংস ৪২০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৭২০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গত বছরের তুলনায় এবার গরুর মাংসে কেজিপ্রতি দাম কমলো ২৫ টাকা।
সুপারশপগুলোর জন্যও এ দাম প্রযোজ্য বলেও জানান মেয়র।
সোমবার (১৪ মে) দুপুরে নগরভবনের ব্যাংক ফ্লোরে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেন মেয়র সাঈদ খোকন। এসময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাহউদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. জাহিদ হোসেন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার ও বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গতবছর প্রতিকেজি দেশি গরুর মাংসের মূল্য ছিলো ৪৭৫ টাকা, বিদেশি বোল্ডারের দাম ছিলো ৪৪০ টাকা, মহিষের মাংসের দাম ছিলো ৪৪০ টাকা ও খাসির মাংসের দাম ছিলো ৭২৫ টাকা।
উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এই দাম মেনে চলবে কি-না এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, সাধারণত আমরা যে দাম নির্ধারণ করি তারাও সেটাই করে। গত বছরও দুই সিটি করপোরেশনে মাংসের দাম একই ছিল। এই দাম না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ার করেন মেয়র।
মেয়র আরো বলেন, এবারে গত রমজানের চেয়ে পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে। আমরা বলতে পারি, দ্রব্যমূল্য ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। অধিকাংশ পণ্যের দাম স্থিতিশীল। আশা করি রমজানজুড়ে এ অবস্থা থাকবে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, একটি মাস আমরা মুনাফা কম করলাম। এটা করলে হয়তো আল্লাহ ব্যবসায় আরও উন্নতি দিতে পারেন। একটি মাস মাংসের মূল্য এবং গুণগত মান নিশ্চিত করি। ওজন যেন ঠিকমতো দেই। সাধারণ ক্রেতা যেন না ঠকেন। এ ব্যাপারে আমাদের ধর্মেও কঠোর অনুশাসন আছে। এ তিনটি জিনিস আমরা নিশ্চিত করি।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসি'র পক্ষ থেকে মাংস ব্যবসায়ীদের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো, রমজান মাসে জবাইখানায় সিটি করপোরেশনের বিধি অনুযায়ী স্বাস্থ্যসম্মত ও হালাল উপায়ে পশু জবাই, বাসি-পচা মাংস বিক্রি না করা, দোকানে মাংসের ওজন পরিমাপের জন্য ডিজিটাল মেশিন ব্যবহার করা, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মাংসের সব বর্জ্য অপসারণসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রাখা ও মাংসের মূল্যতালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করা।
বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, রোজায় মাংসের দাম বাড়বে না। সিটি করপোরেশন নির্ধারিত দামেই মাংস বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা।
সিটি করপোরেশনে নির্ধারিত কোনো পশু জবাইখানা নেই অভিযোগ করে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসম্মত মাংস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিলেও দুঃখের বিষয় সিটি করপোরেশনের কোনো পশু জবাইখানা নেই। গাবতলীতে মাংসব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। প্রতিরাতে মাংস ব্যবসায়ীদের বেঁধে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদাবাজদের হাত থেকে ব্যবসায়ীদের বাঁচানোর জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, কোথাও কোনো মাংস ব্যবসায়ী ওজনে কম দেন না, দেবেনও না। সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এরই মধ্যে দেশ মাংসের যোগানে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। আশা করি আগামীতে গরুর মাংস ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৮
এসএম/জেডএস/জেএম