ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিকাশের লেনদেন এলো অ্যাপে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
বিকাশের লেনদেন এলো অ্যাপে বিকাশের অ্যাপ নিয়ে কথা বলছেন কাদির কামাল/ছবি: শাকিল

ঢাকা: গ্রাহকের যে কোনো ধরনের লেনদেন আরো বেশি সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ করতে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ চালু করেছে বিশ্বমানের মোবাইল অ্যাপ।

মঙ্গলবার (১৫ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে সংভাদ সম্মেলনে অ্যাপটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
 
ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা সাধারণ মানুষের আর্থিক অর্ভুক্তির লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিকাশ তাদের অ্যাপটি গত ২৫ এপ্রিল গুগল প্লে স্টোরে দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৪ লাখ গ্রাহক ডাউনলোড হয়েছে।


 
এসময় বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামাল কাদির, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) মীর নওবত আলীসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বিকাশ সিইও বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ইটারনেট সুবিধার বাইরে থাকা সাধারণ মানুষ যারা ফিচার ফোন ব্যবহার করেন, তারাসহ সব গ্রাহক ইউএসএসডি (আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেটারি সার্ভিস ডাটা) পদ্ধতিতে বিকাশের নানান সেবা গ্রহণ করছিলেন। এই পদ্ধতিতে লেনদেন সুবিধা কার্যকর রাখতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের আরো সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ সেবা দিতেই যুক্ত হয়েছে নানা সৃজনশীল ফিচার সমৃদ্ধ বিকাশ অ্যাপ।
 
তিনি বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বিকাশের টেকনিক্যাল টিম অ্যাপটি নিয়ে কাজ করেছেন। বৃদ্ধ থেকে শুরু করে অর্ধ শিক্ষিতরাও যেন অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারেন সে সব দিক মাথায় রেখে অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে।  
 
বিকাশের সিএমও মীর নওবত আলী জানান, ২৫ এপ্রিল গুগল প্লে স্টোরে দেওয়ার পর এ পর্যন্ত ১৪ লাখ গ্রাহক অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন।
 
অ্যাপটির বিভিন্ন ফিচার তুলে ধরে নওবত আলী বলেন, খুব স্বল্প অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন গ্রাহকের কথা বিবেচনায় রেখেই বিকাশ অ্যাপে ইংরেজি ছাড়াও বাংলায় ব্যবহারের সুবিধা রাখা হয়েছে। ছবি ও লেখা সমৃদ্ধ এ অ্যাপে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্স বা মৌখিক নির্দেশনার সুবিধা রয়েছে। যে কোনো লেনদেনের জন্য কী পদক্ষেপ নিতে হবে তা সুনির্দিষ্ট ধাপে গ্রাহকের পছন্দ অনুযায়ী বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় নির্দেশনা দেয় বিকাশ অ্যাপ।
 
‘অ্যাপে লেনদেনের সময় প্রাপকের নম্বর টাইপ করার প্রয়োজন নেই। বিকাশ অ্যাপে সেন্ড মানি, বাই এয়ারটাইম (মোবাইল ব্যালেন্স রিচার্জ) এবং রিকোয়েস্ট মানি লেনদেনের সময় সরাসরি মোবাইলের কন্ট্যাক্ট লিস্ট/ফোনবুক থেকে নম্বর নেওয়া যাচ্ছে। ফলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ’
 
‘বিকাশ অ্যাপে নিরাপত্তাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পিন (গোপন নম্বর) ব্যবহার ছাড়া বিকাশ অ্যাপের কোনো কার্যক্রম সম্ভব নয়। প্রতিবার অ্যাপ ব্যবহারের শুরুতেই একবার পিন (গোপন নম্বর) দিতে হবে এবং যে কোনো ধরনের লেনদেন করতে আবারো পিন ব্যবহার করতে হবে। সুতরাং, পিন গোপন রাখলে অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থাকবে সর্বোচ্চ নিরাপদ ও সুরক্ষিত। এমনকি মোবাইল হারিয়ে গেলেও বিকাশ অ্যাকাউন্টের টাকা সুরক্ষিত থাকবে। ’
 
 
কেনাকাটা আরো সহজ ও ঝামেলামুক্ত করতে বিকাশ অ্যাপে যুক্ত হয়েছে কোড স্ক্যান সুবিধা। ক্যাশ ছাড়াই দ্রুত, নিরাপদে কেনাকাটার পেমেন্টের এই সুবিধাটি পর্যায়ক্রমে দেশে একটি ক্যাশবিহীন ডিজিটাল পেমেন্টের ইকোসিস্টেমকে প্রতিষ্ঠিত করবে। থাকবে না ক্যাশ বহনের ঝামেলা ও ঝুঁকি, খুচরা বা ভাংতি টাকার বিড়ম্বনা। বরং দেবে যে কোনো সময় নিশ্চিন্তে অনলাইন-অফলাইন কেনাকাটার সুবিধা।
 
কেবল কেনাকাটায় নয় দেশের যে কোন প্রান্তে বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে ক্যাশ আউট করতেও যুক্ত হয়েছে আর্ন্তজাতিক বাজারে জনপ্রিয় ছজ কোড।  
  
বিকাশ অ্যাপের কল্যাণে মোবাইল রির্চাজ হচ্ছে আরো সহজ, নির্ভুল ও দ্রুততর। এয়ারটেল, বাংলালিংক, রবি, গ্রামীণফোন এবং টেলিটকে প্রিপেইড ও পোস্টপেইড মোবাইলের ব্যালেন্স রিচার্জ করার সময় টাকার পরিমাণ ভ্যালু শর্টকাট থেকে বেছে নিয়ে যে কোনো ধরনের মোবাইলের ব্যালেন্স রির্চাজ এখন অ্যাপের মাধ্যমে করা যাচ্ছে।
  
অ্যাপের মাধ্যমে এখন সারা মাসের আর্থিক হিসাব থাকবে নিবন্ধিত। ফলে চাইলেই বিবরণ পাওয়া যাবে।
 
প্রতিমাসে নির্দিষ্ট সময়ে দিতে হয় এমন কিছু বিল বা পেমেন্ট থাকে। বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে এখানে রিমাইন্ডার দিয়ে রাখা যাচ্ছে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট সময়ে অ্যাপ গ্রাহককে বিল দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
 
যেসব এজেন্ট থেকে নিয়মিত ক্যাশ আউট করা হয় বা যেসব দোকানে নিয়মিত বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করা হয় সেগুলোর নম্বর বিকাশ অ্যাপে সংরক্ষণ করে রাখার সুবিধাও পাবেন গ্রাহক।
 
দৈনিক ও মাসিক- এই দু’ভাবে লিমিট ও মাসের লিমিট দু’ভাবে তথ্য সাজানো রয়েছে প্রতিটি গ্রাহকের বিকাশ অ্যাপে।
 
বিকাশ অ্যাপে পিন দিয়ে মূল স্ক্রিনে ঢোকার পরেই একটি ট্যাপেই গ্রাহক তার ব্যালেন্স চেক করতে পারছে। কেবল তাই নয়, প্রতিটি লেনদেনের সঙ্গে সঙ্গেই অবশিষ্ট ব্যালেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখিয়ে দেয় অ্যাপ।
 
অ্যাপটিতে থাকা ‘রিকোয়েস্ট মানি’র মাধ্যমে গ্রাহক তার জরুরি প্রয়োজনে টাকা চেয়ে পরিচিত জনের কাছে অনুরোধ পাঠাতে পারছে। যে গ্রাহককে রিকোয়েস্ট পাঠানো হবে তিনি যদি চান তাহলে তিনি সহজেই টাকা পাঠিয়ে দিতে পারবেন রিকোয়েস্টকারীকে। অথবা রিকোয়েস্ট বাতিলও করে দিতে পারবেন।
 
এসএমএস ছাড়াও অ্যাপের মাধ্যমেও সব লেনদেনে নোটিফিকেশন পাওয়া যাবে।
 
গ্রাহক চাইলে প্রিয়জনকে বিকাশ অ্যাপ ব্যবহারের জন্য রেফারও করতে পারবেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।