বৃহস্পতিবার (১৭ মে) জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) সদর দপ্তরে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি একথা বলেন। শুক্রবার (১৮ মে) টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা সেমিনার আয়োজনে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেট্রো, জাইকা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল সেমিনারে অংশগ্রহণ করে। এর আগে গত ১৫ মে জাপানের ওসাকা শহরেও একটি বিনিয়োগ সেমিনারে তারা যোগ দেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত আরো মজবুত করতে ২০১৪ সালে একমত হন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও শেখ হাসিনা। রাবাব ফাতিমা জানান সম্প্রতি জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে জাপান সফর করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তারা দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বন্ধুত্বপ্রতীম সম্পর্ক আরো গভীর করার উপর গুরুত্ব দেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, আজকের সেমিনারে পরিপূর্ণ উপস্থিতিও তাই প্রমাণ করে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার বর্ণনা দিয়ে তিনি জাপানি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং দূতাবাস থেকে সব সময় সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
সেমিনারে মূল আলোচনা করেন বিডা চেয়ারম্যান। তিনি বাংলাদেশকে অন্য যে কোন উন্নত দেশ থেকে নিরাপদ দাবি করেন এবং বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। বিডা চেয়ারম্যান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি ও বর্তমান আধুনিক বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী জাপানি ব্যবসায়ীদের জন্য বিরাট বাজার হতে পারে উল্লেখ করে তিনি সরকারের ব্যবসা সহজিকরণ নীতি ও প্রণোদনাগুলো সেমিনারে উপস্থিত জাপানি ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন এবং ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
সেমিনারে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেট্রোর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নাওয়োশি নোগুচি। তিনি সেমিনারে অংশ নেওয়ায় সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং জাপানি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উপর আস্থা রাখার অনুরোধ করেন। এছাড়া পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মুনসুর মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বাংলাদেশের গ্যাস ও এল.এন.জি ব্যবস্থাপনা নিয়ে উপস্থাপনা করেন।
জাইকার পরিচালক আকিতো তাকাহাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জাইকার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করেন এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ বিদ্যমান বলে মন্তব্য করেন। অন্যদিকে জেট্রো ঢাকার প্রতিনিধি তাইকি কোগা তার বক্তব্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা পরিচালনা করার কিছু নিয়ম, সুবিধা, সমস্যা ইত্যাদি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ব্যবসার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন সিবিসি কোম্পানির হিতোশি টয়োটা।
সেমিনারের আগে জেট্রোর সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের একটি দ্বিপাক্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশের স্টার্ট আপ ব্যবসার সঙ্গে জাপানের এসএমইগুলো ব্যবসায়িক ম্যাচিং আয়োজনের প্রস্তাব করেন নাওয়োশি নোগুচি।
সেমিনার শেষে দুই দেশের ব্যবসায়অ ও প্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং ও কুশল বিনিময় করেন। এসময় সেমিনারে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, মে ১৮,২০১৮
জেডএস