রমজান উপলক্ষে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করে কৃত্রিম সঙ্কটের অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
ক্রেতারা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং না থাকায় দিন দিন বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম।
এদিকে, দাম বাড়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম কিছুটা বাড়ছে।
সকালে শহরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ধরনের সবজি কেজিতে ৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেড়েছে বেগুন, শসা ও রসুনের দাম। এসব দ্রব্যের দাম রমজানের একদিন আগেও কম ছিলো বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন। অনেক ক্রেতাই বাজারে এসে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েন। কারণ হঠাৎ করেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। এ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানের আগে শসা ছিল কেজি প্রতি ৫০ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, ৫০ টাকার পোটল ৬০, ২৫ টাকার পেঁয়াজ ৩০, ১৬ টাকার আলু ২০ টাকা, ৪০ টাকার দেশি রসুন ৬০, ৩০ টাকার বেগুন ৫০ টাকা।
স্কুল শিক্ষক মো. আশ্রাফ হোসেন বলেন, দু'দিন আগেও যেসব পণ্যের দাম কম ছিল হঠাৎ করে সেগুলোর দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সবজির দাম অনেক বেড়েছে। এমন চলতে থাকলে মানুষ খাবে কী।
এছাড়া সয়াবিন তেলেও দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। ৫২ টাকার চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা, ছোলাও ৫ টাকা বেড়ে বর্তমানে ৬৫ টাকা।
মুদি ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, সব কিছুর দাম ঠিকই রয়েছে তবে দু'একটি জিনিসের দাম বেড়েছে।
অন্যদিকে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪শ’ টাকায় আগে ছিল ৪শ’ টাকা। এছাড়া কক মুরগি ২৫০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে ফার্মের মুরগিরও। প্রতি কেজি মুরগি ১৩০ টাকার স্থলে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মুরগির দাম বেড়েছে বলে জানান ক্রেতা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হয়েছে। সব কিছুরই দাম বাড়তি। বাজার মনিটরিং প্রয়োজন।
বাজারে ইলিশ, পোয়া, চিংড়ি, ছুড়া, কই, তেলাপিয়া ও কাতাল মাছের সরবরাহ থাকলেও দাম আকাশচুম্বী। হালি প্রতি বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ হাজার থেকে ৩০০০ টাকা, মাঝারি ১৫০০ থেকে ২ হাজার এবং ঝাটকা ১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা মো. সুমন জানান, নদীতে মাছের আমদানি কম, তাই দাম একটু বাড়তি। তবে বেশি মাছ পাওয়া গেলে দাম কমতে পারে।
ভোলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এসএম বাহাউদ্দিন বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো মনিটরিং হচ্ছে না, সব ধরনের জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সিন্ডিকেটের কাছে ভোক্তারা অসহায় হয়ে পড়েছে। পাইকারি বাজার থেকে বিক্রেতারা যে মূল্যে পণ্য কিনে আনেন তার চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করেন নানা অজুহাত দেখিয়ে।
এ ব্যাপারে ভোলার জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, প্রতিদিন বাজার মনিটরিং হচ্ছে, বিষয়টি আমরা খুব সিরিয়াসলি দেখছি। কেউ যদি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তিনি নিজেও বাজার মনিটরিং-এ নামবেন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৮ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
আরএ