চিনির কাঁচামাল আখ না থাকায় এমনটি ঘটেছে। তবে কৃষকদের দাবি, চিনিকলের অব্যবস্থাপনার কারণেই কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
এক সময় কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পুরো মালিহাদ ইউনিয়ন, সদরপুর ইউনিয়নের কিছু অংশ এবং বড়বাড়িয়া, হিদিরামপুর ও কাকিলাদহে ব্যাপক হারে আখ চাষ হতো।
সদরপুর এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ১৯৯১ সালে যখন আমার ফুফা বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষক নেতা মারফত আলী মারা যান, তখন তিনি ছয় বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছিলেন। তার মৃত্যুর পরে সেগুলো আমি নিজে দেখভাল করি। ভালো আখ উৎপাদন করায় জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করি। তখন আখ চাষে আগ্রহ ছিলো এলাকার মানুষের। তারপর কুষ্টিয়ার সুগারমিল সঠিক সময়ে আখ কিনতো না। আমরা আখ দিতে গেলে মিল নিতো না। নিলেও অনেক কষ্টের পর। আখ চাষে উৎসাহিত করলেও তারা কিনতো না ঠিকমতো। এক শ্রেণির দালালদের সঙ্গে কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন। কৃষকদের আখ ওজনে কম দেখানো হতো। তারপর কৃষকরা আখ চাষে মুখ ফিরিয়ে নেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার যদি কৃষককে সঠিকভাবে আখ কেনার নিশ্চিয়তা দেয় তাহলে আবারো আখ ও সুগারমিলের সুদিন ফিরবে।
আরেকজন কৃষক আব্দুল করীম বাংলানিউজকে বলেন, আখ দীর্ঘ মেয়াদী ফসল হলেও চাষে লাভ রয়েছে। আমি ছয়-সাত বিঘা করে আখ চাষ করতাম। সর্বশেষ ১৯৯২ সালে মিল যখন আখ কেনায় কৃষকদের ভোগান্তিতে ফেললো, আমি তখন আখ বিক্রি করতে পারিনি। তাই আখ চাষ করা বন্ধ করে দিয়েছি। এখন সেসব জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। তবে চাষিদের এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন কুষ্টিয়া সুগারমিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাদের।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে এসএমএস এর মাধ্যমে সরাসরি চাষির কাছ থেকে আখ কিনে সিয়্যর ক্যাশের মাধ্যমে টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে চাষিদের আখ চাষে উৎসাহিত করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৮
এসআই
** লোকসান কাটিয়ে উঠবে কুষ্টিয়া সুগারমিল: এমডি
** সুবিধা পেলে আখ চাষে ফিরতে চায় কৃষক
** ৩ মাস ধরে বেতন পান না কুষ্টিয়া সুগারমিলের কর্মীরা
** সর্বশেষ ৯৩ লাখ টাকা লাভ করে কুষ্টিয়া সুগারমিল
** থেমে যেতে বসেছে চিনিকল শ্রমিকদের সংসারের চাকা