শুক্রবার (২৫ মে) সরেজমিন এ তিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি সবজি পাইকারি ও খুচরা বাজারের বিক্রির ব্যবধান অনেক বেশি। কোনও কোনও পণ্য বিক্রি হচ্ছে দুই গুণ বেশি দরে।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আলম প্রতি কেজি শসা ৬০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, মরিচ ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৭০ টাকা বিক্রি করছেন। এর সত্যতা পাওয়া গেল ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু মিডিয়াকর্মীর নাম জানা মাত্রই শসার দাম ৬০ টাকা থেকে ৪০ টাকা হয়ে গেল। বেগুন ও মরিচের দাম হয়ে গেল ৫০ টাকা।
এ বিষয়ে আলমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে অবশ্যই স্বীকার করে বলেন, কয়েকদিন ধরে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে আগের দামে সবজি কেনা থাকায় দাম একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।
আলমের মতো এ বাজারের অন্যরাও একইভাবে সবজির দাম বেশি রাখছেন। তবে মিডিয়ার গাড়ি আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিটি সবজির দাম কম যায়।
সালেহা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, এইমাত্র আমি বেগুন কিনতে গেলে তারা ৭০ টাকা কেজি দাম চায়। এর কয়েক মিনিট পরই ৩০ টাকা কমে গেল!
সালেহা বাংলানিউজের কাছে অভিযোগ করে বলেন, তাদের মামলার ভয় আছে। এজন্য মিডিয়ার কেউ এলেই দাম কমে যায় পণ্যের।
শাক বিক্রেতা শাহেদ প্রতি আটি পালং ও লাল শাক বিক্রি করছেন ৩০ টাকা করে। সাদা শাক ২০ টাকা, কলমি ২০ টাকা। এক ফটো সাংবাদিক দেখার পরই শাকের দাম কমে যায়। সে জানায় পালং ২০ টাকা, লাল শাক ২০ টাকা আটি। এ বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে কোনও উত্তর দেননি।
এ বাজারের ঠিক এক কিলোমিটার দূরে অবস্থান কাঁঠালবাগান কাঁচাবাজার। বাজারের পশ্চিম দিকে একটি বাজার তালিকা টাঙানো আছে। বিক্রির সঙ্গে এ তালিকার কোনও মিল পাওয়া যায়নি। তালিকায় মরিচের দাম দেওয়া আছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ টাকা। কাঁচা পেঁপের দাম ২৮ থেকে ৩২ টাকা থাকলে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। টমেটোর দাম ৩৮ টাকা লেখা থাকলে বিক্রি করা হচ্ছে ৬০ টাকায়। ধনে পাতা ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলে এখানে ১০ গ্রাম ধনে পাতা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। পটল ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।
এ বিষয়ে বাজারের সবজি বিক্রেতা ফয়সাল বলেন, এখানকার তালিকা নিয়মিত হয় না। তাছাড়া তালিকার সঙ্গে কাঁচাবাজারের সম্পর্ক নেই। এটা সব সময় ওঠা-নামা করে। তাই দাম একটু বেশি হচ্ছে। আবার অনেক সময় কম দামেও পাওয়া যায়। যদিও দাম কমার রেকর্ড নেই এখানে।
শান্তিনগর কাঁচাবাজারে সংবাদকর্মীর সঙ্গে এক দাম বলা হয়, অন্যদিকে বিক্রির সময় হাকা হয় চড়া মূল্য। এ বাজারে প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। কিন্তু সংবাদকর্মীর পরিচয় জানতে পেরেই লাউটির দাম চাওয়া হয় ৪০ টাকা। এভাবে এক বাজারে দুই রকম তথ্য পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৮
ইএআর/আরবি/