ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ক্রেডিট রিপোর্টকে গুরুত্ব না দেওয়ায় ৬শ’ কোটির অনিয়ম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
ক্রেডিট রিপোর্টকে গুরুত্ব না দেওয়ায় ৬শ’ কোটির অনিয়ম

ঢাকা: সম্প্রতি একটি রফতানি আদেশের বিপরীতে ২৬টি প্রতিষ্ঠান পণ্য রফতানি করার পরও পেমেন্ট পায়নি। আমদানিকারককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৬০০ কোটি টাকা অনিয়মের ঘটনা পরবর্তীতে সবার নজরে আসে। ক্রেডিট রিপোর্টকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়েছে।

সোমবার (২৮ মে) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘প্র্যাকটিসেস অব অবটেইনিং ক্রেডিট রিপোর্ট অব ফরেন কাউন্টারপার্টস ইন ট্রেড সার্ভিসেস-ইজ ইট ওয়ার্কিং?’ শীর্ষক  গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলা হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

বৈঠকের উদ্বোধন করে বিআইবিএমের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য সেবার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে দক্ষতার পরিচয় দিতে না পারলে ব্যাংক এবং রাষ্ট্রীয় ঝুঁকি দু’টোই বাড়বে।
 
তিনি বলেন, অর্থ পাচার ঠেকানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। শেল ব্যাংকগুলোর (শেল ব্যাংক বলতে ব্যাংকটি যে দেশে নিবন্ধিত কিন্তু সে দেশে কোনো শাখা বা কার্যক্রম নেই) সঙ্গে কোন লেনদেন যাতে না হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আরও কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
 
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীব বলেন, ক্রেডিট রিপোর্ট হল বিদেশি আমদানিকারক বা রফতানিকারকের বিষয়ে বিশদ বিবরণ। এর পেছনে প্রতিবছর প্রায় দেড় কোটি ডলার অর্থ ব্যয় হয়, যা অযৌক্তিক নয়। কিন্তু ক্রেডিট রিপোর্ট একদিকে যথাযথভাবে হয় না, অন্যদিকে গৎবাধা হলেও এসব ক্রেডিট রিপোর্ট কোন ধরনের বিশ্লেষণ করা হয় না। ফলে অনেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান জাল-জালিয়াতির সুযোগ পায়।
 
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য ব্যাংকারদের সর্তক থাকতে হবে। ব্যাংকাররা সর্তক থাকলে কোন অনিয়মের ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই।
 
বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক  এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকারদের আরও সচেতন হতে হবে। কারণ কেউ যেন ব্যাংকারদের ব্যবহার করে অবৈধ সুবিধা কিংবা টাকা পাচার করতে না পারেন।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থপাচারের ৮৩ শতাংশ হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে। এ কারণে ব্যাংক সতর্ক থাকলে কোন অনিয়ম ঘটার সুযোগ নেই।
 
সমাপনী বক্তব্যে বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমআইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।